প্রতীকী ছবি।
এত দিন পুকুর সংস্কার, রাস্তা তৈরি-সহ নানা কাজে অন্যতম ভরসা ছিল একশো দিনের প্রকল্প। এ বার সেই প্রকল্পেই হবে মশা নিধনের কাজও। গত ৮ জুন রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত ও স্বাস্থ্য দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিবেরা যৌথ ভাবে এই মর্মে নির্দেশিকা দিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
প্রশাসনের কর্তারা জানান, ওই নির্দেশিকায় ডেঙ্গু, চিকুনগনিয়া ও ম্যালেরিয়া রুখতে জেলাস্তরে নির্দিষ্ট প্রকল্প নিতে হবে। একশো দিনের প্রকল্প থেকে ওই কর্মসূচি বাস্তবায়িত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কী রয়েছে ওই নির্দেশে? ব্যক্তিগত উদ্যোগে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে প্রায় দেড় লাখ বাড়িতে ৯০ বর্গফুট আকারের এবং স্কুল ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে আরও বড় আকারে গর্ত তৈরি করে সেখানে পচনশীল আবর্জনা ফেলতে হবে। গর্তগুলি মশারি দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। ওই পরিবারগুলিকে একশো দিনের প্রকল্প থেকে মজুরি দেওয়া হবে।
প্রতিটি নলকূপের চার দিক কংক্রিট দিয়ে বাঁধিয়ে ছোট নর্দমা তৈরির কথাও বলা হয়েছে। ওই নির্দেশিকায় সমস্ত কাজের ‘পাক্ষিক’ রিপোর্ট রাজ্যস্তরে পাঠানো এবং এই কাজে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনগুলিকে। এর জন্য জেলা স্তরে গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিক, সিএমওএইচ বা তাঁর প্রতিনিধি, একশো দিনের প্রকল্পের আধিকারিকদের রেখে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। ব্লক স্তরে বিডিও-র নেতৃত্বে ওই কমিটি কাজ করবে।
নির্দেশিকায় স্বনির্ভর গোষ্ঠী, গ্রামীণ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা কমিটিকে সংযুক্ত করে ওই তিনটি রোগ ও সেগুলির বিরুদ্ধে সচতেনতা প্রচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে একশো দিনের কাজের সুপারভাইজারদের। ঠিক হয়েছে, তাঁরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে আবর্জনা ও নিকাশি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট পরিবারকে পরামর্শ দেবেন।
তবে কী ভাবে দেড় লাখ পরিবার বা বাড়িকে বাছা হবে?
দুই জেলার একশো দিনের প্রকল্পের আধিকারিক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “একশো দিন প্রকল্প থেকে ১৫-২০ দিন কাজ করেছেন এমন দেড় লাখ পরিবারে ওই কাজ শুরু হয়েছে। তাঁরা একলপ্তে আট দিন কাজ পাচ্ছেন। বাড়িতে গর্ত তৈরির কাজ শেষের পর বিদ্যালয় ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওই কাজ করা হবে।” স্বাস্থ্যকর্তাদের আশা, এই সিদ্ধান্তে মশার উপদ্রব কমবে। তবে সেই সঙ্গে তাঁদের পরামর্শ, সচেতনতা প্রচারের কাজ আগামী সাড়ে তিন মাস টানা চালিয়ে যেতে হবে। না হলে নির্দেশিকা কাগজে-কলমেই থেকে যাবে।