প্রশ্নে খাবারের গুণমান

ছাড়পত্রের কথা অজানা রেস্তোরাঁর

শহরের বহু ক্রেতারই দাবি, নানা রেস্তোরাঁয় গিয়ে খারাপ খাবার পাতে, এমন অভিজ্ঞতা তাঁদেরও রয়েছে। কিন্তু কোথায় অভিযোগ জানাবেন, তা অজানা। এমনকী ‘ফুড সেফটি অফিসার’ নামে যে একটি পদ রয়েছে, তা-ও জানা নেই বহু রেস্তোরাঁ মালিকের।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:০৯
Share:

—ফাইল চিত্র।

খারাপ খাবার দেওয়ার অভিযোগে আসানসোল বাজারের একটি রেস্তোরাঁয় গত বুধবারই অভিযান চালান পুরসভার কর্তারা। তার পরে শহরের বহু ক্রেতারই দাবি, নানা রেস্তোরাঁয় গিয়ে খারাপ খাবার পাতে, এমন অভিজ্ঞতা তাঁদেরও রয়েছে। কিন্তু কোথায় অভিযোগ জানাবেন, তা অজানা। এমনকী ‘ফুড সেফটি অফিসার’ নামে যে একটি পদ রয়েছে, তা-ও জানা নেই বহু রেস্তোরাঁ মালিকের। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন, যথাযথ ছাড়পত্র নিয়ে এই রেস্তোরাঁগুলি চলছে কি না।

Advertisement

সম্প্রতি আসানসোলের ফতেপুরে একটি রেস্তোরাঁয় সপরিবার খেতে গিয়েছিলেন কলেজ শিক্ষক দিব্যজ্যোতি রায়। তাঁর দাবি, মাংস মুখে দিতেই দেখি, পচা। চিৎকার-চেঁচামেচি জুড়লে মাংস-বদল হয়। অভিযোগ জানাননি কেন? ওই শিক্ষকের দাবি, ‘‘কোথায় জানাব নালিশ, তাইই তো জানি না।’’ শহরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, এমন ঘটনা একাধিক রেস্তোরাঁ ও খাবারের দোকানে ঘটেছে। পচা, বাসি খাবার দেওয়াকে কেন্দ্র করে ক্রেতা-বিক্রেতা গোলমালের ছবিও কম নেই।

যদিও পশ্চিম বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদারের দাবি, ‘‘খাবারের গুণমান বিচার করে রেস্তোরাঁকে শংসাপত্র দেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে থাকা ফুড সেফটি অফিসার। খাবার খারাপ হলে তাঁর কাছেই অভিযোগ করা যাবে।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ২০০৬-এর ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডাস অ্যাক্ট’ অনুসারে ফুড সেফটি অফিসার কোনও বেচাল দেখলে সংশ্লিষ্ট রেস্তোরাঁ বা খাবারের দোকানের শংসাপত্র বাতিল করতে পারেন।

Advertisement

দেবাশিসবাবু জানান, এই মুহূর্তে পূর্ব বর্ধমানের ফু়ড সেফটি অফিসারকেই বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পশ্চিম বর্ধমানেরও। কিন্তু শহরবাসীর প্রশ্ন, তাঁর কাছ থেকে আদৌ শংসাপত্র নেওয়া আছে কি আসানসোলের রেস্তোরাঁগুলির। নিয়মিত অভিযানও চলে না বলে অভিযোগ। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দেবাশিসবাবু।

কিন্তু পুরসভার কর্তাদেরই দাবিটা উল্টো। বুধবার আসানসোলের ওই রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে পুরসভার মেয়র পরিষদ (স্বাস্থ্য) দিব্যেন্দু ভগত নিজেই বলেছিলেন, ‘‘ওই রেস্তোরাঁর ‘ফুড লাইসেন্স’ নেই।’’ শুধু তাই নয়, ফুড সেফটি অফিসারের নেতৃত্বে অভিযান চলেনি, এমনকী এ রকম কোনও ‘পদ’ রয়েছে তা-ও জানা নেই, দাবি আসানাসোলের বেশ কিছু প্রথম সারির রেস্তোরাঁর ম্যানেজারদের। এক ম্যানেজারের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘খাবার বিক্রি করতেও শংসাপত্র লাগে, জানি না তো।’’ তবে কয়েক জন হোটেল মালিকের দাবি, সরাইখানার শংসাপত্র নবীকরণ করানোর সময় জেলা ফুড সেফটি অফিসারের কাছে শংসা নিতে হয়। তবে অভিযান হয়েছে, এমনটা চিন্তা করেও মনে করতে পারেননি তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন