শাসন করতে গিয়ে তিন বছরের মেয়েকে মেরেই ফেলল মা!

কালনার মধুবন এলাকায় এক ছেলে এবং সাত বছরের মেয়ে অষ্টমী ও তিন বছরের মেয়ে নিবেদিতাকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন ওই তরুণী। কালনা থানার পুলিশ জানায়, এ দিন বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ নিবেদিতাকে কোলে নিয়ে রুমা পড়শিদের জানান, ‘মেয়ে অসুস্থ’। বাড়ির মালিক অনিমা দত্তের দাবি, ‘‘বাচ্চাটাকে এ দিন প্রথম যখন দেখি, ওর গলায় কালশিটে ছিল। ওর বিছানায় পড়েছিল গামছা।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৭ ১৩:০০
Share:

মৃত মেয়েকে নিয়ে রুমা নবদ্বীপগামী বাসে উঠে চম্পট দিতে যান।— প্রতীকী ছবি।

ছোট মেয়েকে শাড়িতে জড়িয়ে তরুণীকে বেরোতে দেখেই সন্দেহ হয়েছিল পড়শিদের। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে শিশুটিকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা। এর পরেই ময়না-তদন্ত না করিয়ে চম্পট দেওয়ার সময়ে রুমা সাঁতরা নামে বছর ২৯-র এক তরুণীকে হাতেনাতে ধরে ফেলল পুলিশ। আটক করা হয়েছে তরুণীর মা ও তাঁর এক পরিচিতকে। বৃহস্পতিবার কালনার ঘটনা।

Advertisement

কী ঘটেছিল এ দিন? কালনার মধুবন এলাকায় এক ছেলে এবং সাত বছরের মেয়ে অষ্টমী ও তিন বছরের মেয়ে নিবেদিতাকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন ওই তরুণী। কালনা থানার পুলিশ জানায়, এ দিন বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ নিবেদিতাকে কোলে নিয়ে রুমা পড়শিদের জানান, ‘মেয়ে অসুস্থ’। বাড়ির মালিক অনিমা দত্তের দাবি, ‘‘বাচ্চাটাকে এ দিন প্রথম যখন দেখি, ওর গলায় কালশিটে ছিল। ওর বিছানায় পড়েছিল গামছা।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অচেতন নিবেদিতাকে শাড়িতে জড়িয়ে বাড়ির বাইরে পা দিতেই কয়েক জন পড়শি রুমাকে শিশুটির বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন। যদিও তরুণী কোনও সুদত্তর দিকে পারেননি বলে দাবি পড়শিদের। এর পরে পড়শিরা রুমা ও নিবেদিতাকে টোটো-য় চাপিয়ে কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। পুলিশ জানায়, হাসপাতালে নিবেদিতাকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা। ময়না-তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযোগ, এর পরেই মৃত মেয়েকে নিয়ে রুমা নবদ্বীপগামী বাসে উঠে চম্পট দিতে যান। তখনই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দেহটি পাঠানো হয় ময়না-তদন্তে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে শিশুটিকে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, রুমার বিয়ে হয়েছিল নদিয়ার বেথুয়ার গাছা এলাকায়। বাপের বাড়ি, কালনার মধুবন এলাকাতেই। বছর খানেক আগে রুমার স্বামী মারা যান। সপ্তাহ দুয়েক আগে রুমা বাপের বাড়ির অদূরেই অম্বিকা কালনা স্টেশনের নীচে একটি ভাড়াবাড়িতে ওঠেন। কয়েকটি বাড়িতে তিনি পরিচারিকার কাজ করতেন।

পুলিশ জানায়, এ দিন তরুণীর ছেলে তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া অরবিন্দর দাবি, ‘‘সারা দিন স্কুলে ছিলাম।’’ মেয়ে অষ্টমী জানায়, ‘‘মা সকাল থেকে বাখারি দিয়ে মারধর করছিল। তাই দিদার বাড়ি চলে যাই।’’ পুলিশের দাবি, রুমা জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছেন। জেরায় রুমা পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি ঘুমোচ্ছিলেন। নিবেদিতা ছটফট করায় তাকে শাসন করতে গিয়ে বিপত্তি ঘটে। কালনার এসডিপিও প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন