East Burdwan

তদন্তে গাফিলতি, ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী তথা কালনা বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রবীণ সদস্য মলয় পাঁজা বলেন, ‘‘তদন্তকারী অফিসারকে নিজের পকেট থেকে জরিমানা দেওয়ার এমন রায় বিরল।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৯ ০০:২৬
Share:

ফাইল চিত্র।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় রুজু হয়েছিল অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা। পূর্ব বর্ধমানের কালনায় সেই মামলায় বেকসুর খালাস হলেন অভিযুক্ত। তবে মামলার তদন্ত ঠিক ভাবে হয়নি জানিয়ে তদন্তকারী অফিসারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারক। বৃহস্পতিবার মামলার রায়ে মৃত ছাত্রীর পরিবারকে যে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে দেড় লক্ষ টাকা ওই অফিসারকে নিজের পকেট থেকে দিতে বলা হয়েছে।

Advertisement

মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী তথা কালনা বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রবীণ সদস্য মলয় পাঁজা বলেন, ‘‘তদন্তকারী অফিসারকে নিজের পকেট থেকে জরিমানা দেওয়ার এমন রায় বিরল। বিচারক তপনকুমার মণ্ডল তাঁর রায়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন, তদন্তকারী দায়িত্ব এড়ানোর জন্যই মৃতের পরিবার সুবিচার পেল না।’’

পুলিশ জানায়, ২০১৪ সালে স্কুলে গিয়ে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয় পূর্বস্থলীর কালেখাঁতলা পঞ্চায়েতের লোহাচুর এফপি বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী তনুশ্রী ধরের। প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান অভিযোগ করেন, স্কুল লাগোয়া জমি থেকে পাতা আনতে গিয়ে লোহার তারের বেড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় তনুশ্রী। ওই জায়গায় মালিক ‘হুকিং’ করায় ওই বেড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ ঘটেছিল বলে অভিযোগ। এর পরেই জমিমালিকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করে পুলিশ। তদন্তভার নেন পূর্বস্থলী থানার তৎকালীন এসআই অজয়কুমার গুপ্ত।

Advertisement

আইনজীবীরা জানান, রায়ে বিচারক পুলিশের তদন্তে বেশ কয়েকটি গাফিলতির কথা জানিয়েছেন। যেমন, মামলায় প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিল না। উদ্ধার করা হয়নি হুকিংয়ের তার। নেওয়া হয়নি বিশেষজ্ঞের মতামত। অভিযুক্তের জমির নথিপত্রও আদালতে পেশ করা হয়নি। অভিযোগকারী প্রধান শিক্ষক এ দিন বলেন, ‘‘মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হয়েছিল মেয়েটির। দোষীর যথাযথ সাজা হলে ভাল লাগত।’’ মৃত ছাত্রীর মা জ্যোৎস্নাদেবী বলেন, ‘‘খেলতে গিয়ে মেয়ের এমন পরিণতি হবে ভাবতে পারিনি। আমরা চেয়েছিলাম, প্রকৃত দোষীর সাজা হোক।’’

আইনজীবীরা জানান, বিচারক এ দিন নির্দেশ দিয়েছেন, দু’মাসের মধ্যে টাকা দিতে না পারলে বার্ষিক ১০ শতাংশ হারে সুদ-সহ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে শিশুটির পরিবারকে। অজয়বাবু বর্তমানে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটে কর্মরত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘আদালতের রায়ের বিষয়ে আমি এখনও কিছু জানি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন