এমনই লাইন পড়ছে নানা ব্যাঙ্কের সামনে। নিজস্ব চিত্র।
পাওয়ার কথা সর্বোচ্চ ২৪ হাজার। কিন্তু বহু জায়গাতেই তা পাওয়া যাচ্ছে না। একে নগদের অভাবে জেরবার। তার উপরে নিয়ম অনুযায়ী যে টাকা মেলার কথা ব্যাঙ্ক থেকে তা-ও না পেয়ে সমস্যায় পড়ছেন গ্রাহকেরা। ব্যাঙ্কগুলি যদিও জানাচ্ছে, তারা যেমন জোগান পাচ্ছে, সেই অনুযায়ী টাকা দিচ্ছে।
বর্ধমানে দু’একটি ব্যাঙ্কের শাখা ছাড়া আর কোথাও কোনও গ্রাহককে সর্বোচ্চ ২৪ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে না বলে গ্রাহকেরা জানিয়েছেন। কোথাও ৫ হাজার, কোথাও ১০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। শহরের এক ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের কথায়, ‘‘কখন কেমন টাকার জোগান থাকছে, তার উপরে সব নির্ভর করছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত যেমন আমাদের শাখায় পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় গ্রাহকদের দাবি মতো টাকা দিতে পারিনি। কিন্তু তার পরে টাকা চলে আসায় বুধবার পর্যন্ত চাহিদা অনুযায়ী দেওয়া গিয়েছে। তার পরে ফের আগের অবস্থা।’’
কাটোয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি শুক্রবার গ্রাহকদের ২৪ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে পেরেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে সমস্যা রয়েছে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে। সেখানকার ম্যানেজার পার্থসারথি ঘোষ বলেন, ‘‘চার হাজারের বেশি গ্রাহকদের টাকা দিতে পারছি না। কৃষি সমবায়গুলিকে আগে টাকা দিতে হওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে।’’ এ দিন ওই ব্যাঙ্কে এসেছিলেন কাটোয়ার ব্যবসায়ী সত্যজিৎ বণিক। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘২৪ হাজার টাকা পাব ভেবে এসেছিলাম। কিন্তু তা না পেয়ে লেনদেনে সমস্যা হচ্ছে।’’
কালনা সাহু সরকার মোড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের একটি শাখায় গিয়েও দেখা গেল এক চিত্র। সকালেই লাইনে দাঁড়ানো গ্রাহকদের জানিয়ে দেওয়া হয়, পর্য়াপ্ত টাকা নেই। সুদীপ্ত ঘোষ নামে এক গ্রাহক জানান, সেভিংস অ্যাকাউন্টে দু’হাজার ও কারেন্ট অ্যাকাউন্টে ৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।
তবে শুক্রবার দুর্গাপুরের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে নগদে টানাটানি তেমন ছিল না। তবে শনি ও রবিবার পরপর দু’দিন ছুটি থাকায় এটিএমগুলির পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে পারেননি ব্যাঙ্কগুলির কর্তৃপক্ষ। এ দিন শহরে নানা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্ধারিত সীমা পর্যন্তই গ্রাহককে চাহিদা অনুযায়ী নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে অধিকাংশই অনেকে কম পরিমাণ নগদ তুলেছেন বলে জানান ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। কিছু ব্যাঙ্ক জানায়, প্রাথমিক ভাবে গ্রাহকদের অনুরোধ করা হয়েছে, যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই আপাতত তুলতে। যাতে পরের দিকে অন্য গ্রাহকদের টাকা পেতে সমস্যা না হয়। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নগদ নোটের অভাব আপাতত নেই।’’ ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ ফেডারেশন-র পক্ষে অচিন্ত্য মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাত-দিন এক করে আমরা গ্রাহকদের পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। খালি হাতে যাতে কাউকে ফিরতে না হয় সে দিকে নজর রয়েছে আমাদের।’’