দুর্গাপুর ব্যারাজে চলছে কাজ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের সেচমন্ত্রীর ঘোষণার ছ’মাস পরে শেষমেশ ডিভিসি-র দুর্গাপুর ব্যারাজে পুরনো লকগেট সরিয়ে নতুন গেট বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। শুক্রবার এই কাজ শুরু হয়েছে।
গত বছর ২৪ নভেম্বর ভোরে ডিভিসি ব্যারাজের দুর্গাপুরের দিকের প্রথম লকগেটের একাংশ বেঁকে যাওয়ায় হু হু করে জল বেরিয়ে যেতে শুরু করে। সেচ দফতরের কর্তা ও ইঞ্জিনিয়ারেরা ছুটে আসেন। কিন্তু সেই সময়ে তাঁরা কিছুই করতে পারেননি। ২৫ নভেম্বর ভোরে দেখা যায়, জলাধারের সব জল বেরিয়ে গিয়ে ব্যারাজ জলশূন্য হয়ে গিয়েছে। এর পরেই শহরে শুরু হয় পানীয় জলের আকাল। শেষমেশ এক নম্বর গেটটি সাময়িক মেরামতি করে ও সামনে একটি ফ্লোটিং গেট বসিয়ে জল আটকানো হয়।
প্রথমে সেচ দফতর জানায়, বিকল লকগেটটি খুলে স্থায়ী ভাবে মেরামত করা হবে। ঘটনার কয়েক দিন পরে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যারাজ পরিদর্শনে আসেন। সেচ দফতরের সচিব, যুগ্ম সচিব, চিফ ইঞ্জিনিয়ার, ডিজাইন ও রিসার্চ দফতরের প্রধান, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক, ব্যারাজ ও গেট সম্পর্কে অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। বিকল গেট পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞেরা জানান, সেটির মেরামতি সম্ভব নয়। তা বদলে নতুন লকগেট বসানোর প্রস্তাব দেন তাঁরা। বৈঠক শেষে মন্ত্রী জানান, বিকল গেট সরিয়ে নতুন গেট বসানো হবে। আপতকালীন পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে আরও একটি অতিরিক্ত গেট ব্যারাজে এনে রাখা থাকবে। কিন্তু তার পরে ছ’মাস কেটে গেলেও কাজ শুরু না হওয়ায় বর্ষায় কী পরিস্থিতি হবে, তা ভেবে শঙ্কিত ছিলেন শহরবাসী।
শুক্রবার ব্যারাজে গিয়ে দেখা গেল, পুরনো গেটটি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলা হচ্ছে। এর পরে ক্রেনে করে উপরে তুলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দুর্গাপুর শহরের বীরভানপুরের দিক থেকে ব্যারাজে ওঠার রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে রাখা হয়েছে ক্রেন। যান নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় পুলিশকর্মীদের। সেচ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পুরনো গেটটি পুরো সরিয়ে ফেলার পরে নতুন গেট বসানো হবে। তার পর ফ্লোটিং গেটটিকে সরিয়ে আগের জায়গায় নিয়ে গিয়ে রাখা হবে।’’ তবে পুরো কাজ শেষ করতে কত দিন সময় লাগবে সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি। তবে সেচ দফতরের কর্তাদের একাংশের দাবি, বর্ষার আগেই কাজ শেষ করার জন্য সব রকম চেষ্টা করা হবে।