আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য জেলার তুলনামূলক বড় থানাগুলি ভাঙার পরিকল্পনা নিয়েছে বর্ধমান পুলিশ। আউশগ্রাম থানা ভেঙে গুসকরা ও ছোড়ায় থানা ভবন নির্মাণের কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘জেলার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ আরও নিবিড় করতে ও সুষ্ঠু পরিষেবা দিতে ওই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’’ জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বর্ধমানের কোতোয়ালি থানার মধ্যে সদরের দুটি ব্লকের দু’শোর উপর গ্রাম ও শহরের ৩৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। বর্ধমান থানা এলাকাতেই বাস করেন প্রায় ৬ লক্ষ লোক। জেলা পুলিশের একাংশের দাবি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বেশ কয়েকটি ফাঁড়ি থাকলেও লোকসংখ্যা যে হারে বাড়ছে তাতে সবদিক সামলানে যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বর্ধমান সদর থানা ভেঙে তিনটি থানার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শহরের ভিতরে ছাড়াও দুই প্রান্তে দু’টি থানা গড়ার চিন্তাভাবনা চলছে। বর্ধমান-কাটোয়া রোডের দেওয়ানদিঘি ও দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর শক্তিগড়ে থানা গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
বর্ধমানের সঙ্গে মন্তেশ্বরের সুতরা ও কালনার বুলবুলিতলাতেও ‘তদন্ত কেন্দ্র’ গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কালনা মহকুমা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, মূল থানা থেকে ওই দুটি এলাকার দূরত্ব বেশ কয়েক কিলোমিটার। ফলে বড় অপরাধ বা সামান্য দুর্ঘটনার পরে পুলিশের যেমন ঘটনাস্থলে যেতে সময় লাগে, তেমনি সাধারণ মানুষের পক্ষেও অভাব-অভিযোগ নিয়ে থানায় আসতে সমস্যা হয়। তদন্ত কেন্দ্র হলে সেক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধে হবে। মেমারির সাতগেছিয়ার ফাঁড়িটিকেও তদন্ত কেন্দ্রে উন্নীত করতে চাইছে জেলা পুলিশ। বর্ধমান পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ইনভেস্টিগেশন সেন্টার মানে তো মিনি থানা।” এ ছাড়াও পানাগড় শিল্প তালুকের ভেতর একজন এএসআইকে রেখে ফাঁড়ি তৈরির অনুমোদন চেয়ে স্বরাস্ট্র দফতরে চিঠি দিয়েছে জেলা পুলিশ।
জানা গিয়েছে, আউশগ্রাম থানা ভেঙে পাণ্ডুরাজার ঢিবির পাশে ছোড়া থানা তৈরি হচ্ছে। আউশগ্রামের ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত, বুদবুদের দেবশালা থাকছে এই থানার আওতায়। বাকি অংশের জন্য থাকছে গুসকরা থানা। আউশগ্রাম থানা ভবনটি ফাঁড়ি হিসাবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্ধমান সদরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানান, ছোড়া থানাকে মডেল হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। মোট তিনটে ভবন থাকবে। গুসকরা থানা ভবনের কাজ চলছে ইটাচাঁদাতে।
২০১০ সালে কেতুগ্রাম ভেঙে কান্দরা ও ২০১১ সালে কাটোয়া ভেঙে দাঁইহাটে নতুন থানার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ওই দুটি প্রস্তাব নিয়েও নড়ে বসেছে জেলা পুলিশ।