বিকল নলকূপ। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুলে যাওয়ার পথে প্রতিদিনই প্রথমে যেতে হয় গ্রামের একমাত্র জল ট্যাঙ্কের সামনে অথবা পুকুরে। রোজ রোজ এমনটা করতে গিয়ে কখনও স্কুলে যেতে দেরি হচ্ছে, কখনও বা অসুস্থ হয়ে পড়ছে পড়ুয়ারা। গ্রামের সবকটি নলকূপই খারাপ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগের এমন ছবিটাই গত তিন মাস ধরে দ্বস্তুর কেতুগ্রামের বহরানে।
গঙ্গাটিকুরি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এই গ্রামে ১২টি টিউবয়েল রয়েছে। কিন্তু মাস তিনেক ধরে সেগুলি থেকে জল মেলে না। এমনকী পঞ্চায়েত অফিসের নিজস্ব টিউবয়েলটিও অকেজো বলে দাবি। এলাকার বাসিন্দা কেশব মণ্ডল, টিঙ্কু চট্টোপাধ্যায়েরা জানান, এই অবস্থায় গ্রামের প্রান্তে থাকা জনস্বাস্থ্য দফতরের জলের ট্যাঙ্ক এবং গোটা দশেক পুকুরই ভরসা। বাসিন্দাদের যদিও অভিযোগ, পুকুরের জল দূষিত, কিন্তু বাধ্য হয়ে তাইই পান করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় প্রায়শই পেটের অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন পড়ুয়া ও বৃদ্ধদের একাংশ। বাসিন্দাদের দাবি, পুজোর আগে পুকুরের জল খেয়েই অসুস্থ হয়ে যায় বহরান জয়দুর্গা উচ্চবিদ্যালয়ের কয়েক জন পড়ুয়া। মাঝিপাড়ার বাসিন্দা বিধান মাঝির দাবি, ‘‘একটা মাত্র জলের ট্যাঙ্কে প্রায় সাত হাজার বাসিন্দার প্রয়োজন মেটে না। তাই বাধ্য হয়ে, সব জেনেশুনে পুকুরের জলই নিয়ে আসছি।’’ পড়ুয়ারা জানায়, জল নিতে গিয়ে মাঝেসাঝে স্কুলে যেতেও দেরি হচ্ছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, সমস্যার সমাধান চেয়ে বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও লাভ হয়নি। শেষমেশ মহকুমাশাসকের কাছে আর্জি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। কেতুগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ শেখ সামসুদ্দিনের যদিও দাবি, ‘‘গ্রামের এই গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাটির কথা পঞ্চায়েত প্রধানকে কয়েক বার মৌখিক ভাবে জানিয়েছি।’’ মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরির আশ্বাস, বিষয়টি নিয়ে বিডিও-র সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।