নালিশ চাঁদা আদায়ের, কার্যালয় নির্মাণ বন্ধ

সগড়ভাঙায় ওই কারখানায় আগে বেছে-বেছে পছন্দের লোক নিয়োগের অভিযোগ ছিল প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সুনীল চট্টোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। যদিও তিনি সে অভিযোগ মানেননি। কয়েক মাস আগে তাঁকে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৭ ০০:০০
Share:

ঠিকা শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে দলের দু’টি গোষ্ঠী বারবার গোলমালে জড়িয়েছে। তারই মধ্যে আবার আইএনটিটিইউসি-র একটি নির্মীয়মাণ কার্যালয় ঘিরে জোর করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে দলের একাংশের বিরুদ্ধে। পুরভোটের মুখে এই ধরনের ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি খারাপের আশঙ্কায় ইতিমধ্যে ওই এলাকার দু’টি ওয়ার্ডের কমিটিই ভেঙে দেন তৃণমূলের নেতৃত্ব। মঙ্গলবার বন্ধ করা হল কার্যালয়ের নির্মাণকাজও।

Advertisement

সগড়ভাঙায় ওই কারখানায় আগে বেছে-বেছে পছন্দের লোক নিয়োগের অভিযোগ ছিল প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সুনীল চট্টোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। যদিও তিনি সে অভিযোগ মানেননি। কয়েক মাস আগে তাঁকে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি করা হয়। পাশের ওয়ার্ডের সভাপতি হন দলে তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত বিনোদ ধীবর। ফেব্রুয়ারিতে দলের জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস সগড়ভাঙায় গেলে বিনোদবাবুর অনুগামীরা ক্ষোভ জানান। মার্চে সুনীলবাবুর স্ত্রী কাউন্সিলর শেফালি চট্টোপাধ্যায় ও তাঁদের ছেলে দলেরই একাংশের হাতে আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ ওঠে।

সম্প্রতি গ্রাফাইট কারখানায় লোক নিয়োগের দাবিতে বিনোদবাবুর অনুগামীরা গ্রাফাইট কারখানার সামনে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা অভিযোগ করেন, দলের একাংশের মদতে ২০১২ সালের পরে দলে আসা লোকজনদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিয়োগ চলছে। সেই রাতেই সুনীলবাবুর উদ্বোধন করা দলীয় কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। কারখানার সামনে নির্মীয়মাণ একটি আইএনটিটিইউসি কার্যালয়ের জন্য জোর করে চাঁদা তোলার অভিযোগ ওঠে। কারখানার শ্রমিক-কর্মী থেকে ট্রাক চালক, চাঁদার জুলুমের খপ্পরে সবাইকেই পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

পরিস্থিতি সামাল দিতে সম্প্রতি সুনীলবাবু ও বিনোদবাবুকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। বহিষ্কার করা হয় দুই কর্মীকে। তিনি আরও জানিয়ে দেন, আইএনটিটিইউসি-র কোনও কমিটি এখন ওই কারখানায় নেই। এর পরেই আইএনটিটিইউসি-র নির্মীয়মাণ কার্যালয়টি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শেষে মঙ্গলবার পুলিশ গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়। তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দলের নাম করে কোনও বেআইনি কাজ বরদাস্ত করা হবে না।’’

সিপিএমের দুর্গাপুর ২ পূর্ব জোনাল সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘কারখানায় লোক নিয়োগ নিয়ে লোক দেখানো আন্দোলন হয়েছে। আসলে বেআইনি কার্যালয় গড়ার নাম করে তোলাবাজি হয়েছে। সে নিয়েই যত গণ্ডগোল।’’ তৃণমূলের উত্তমবাবুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘ক্ষমতায় থাকাকালীন সিপিএম কী করেছে সবাই জানে। আমরা এর বিরুদ্ধে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন