University of Burdwan

আর্থিক দুর্নীতিতে গ্রেফতার সুব্রত

পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করে কারা কারা যুক্ত আছে জানা হবে। তদন্ত চলবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৪ ০৮:৪২
Share:

—প্রতীকী ছবি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতির টাকা যাঁর অ্যাকাউন্টে গিয়েছিল, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেই সুব্রত দাসকে গ্রেফতার করল পুলিশ। কলকাতার বিজয়গড়ের বাসিন্দা সুব্রতকে পুলিশ উত্তর ২৪ পরগণার স্বরূপনগরের চারঘাট থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি টাকা সুব্রতর অ্যাকাউন্টে গিয়েছিল। পরে সেই টাকা বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্টে তিনি পাঠিয়েছেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন। তাঁর কাছ থেকে পুলিশ অনেক তথ্য ও নথিও বাজেয়াপ্ত করেছে।

Advertisement

পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করে কারা কারা যুক্ত আছে জানা হবে। তদন্ত চলবে।’’

কয়েক দিন আগে, আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন কর্মী শেখ এমানুল হককে পুলিশ গ্রেফতার করে। এখন তিনি জেল হেফাজতে। ওই মামলায় আর এক অভিযুক্ত, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দফতরের কর্মী ভক্ত মণ্ডল এখনও পুলিশের কাছে ‘অধরা’। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন না। আবাসনেও তাঁকে দেখা যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শো কজ়ের জবাব পাওয়া যায়নি বলে তাঁকে সাসপেন্ড করার দিকে এগোনো হচ্ছে। পুলিশের দাবি, সুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই ভক্তের সন্ধান পাওয়া যাবে।

Advertisement

গত ৯ ফেব্রুয়ারি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বড়বাজার শাখা বর্ধমান থানায় অভিযোগ করে জানায়, কল্যাণীর একটি সংস্থায় স্থায়ী আমানত ভেঙে টাকা দেওয়ার জন্য ‘পেমেন্ট অ্যাডভাইস’ নিয়ে এসেছিলেন এনামুল। টাকা দেওয়ার জন্য ‘চাপ’ দিচ্ছিলেন ভক্ত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, কাউকে টাকা দিতে বলা হয়নি। রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী ও ফিনান্স অফিসার সৌগত চক্রবর্তীর সই জাল করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দফতর খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারে, জেলখানা মোড়ে অন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা ২০২২ সালের ১২ অগস্ট, ২৬ অগস্ট ও ২০২৩ সালের ২৯ মার্চ যাদবপুরের একটি শাখায় তিনবারে সুব্রতর অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৭৬ টাকা পাঠিয়েছে। রেজিস্ট্রার গত ২২ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন। ঘটনাচক্রে, দু’টি ব্যাঙ্কের ‘পেমেন্ট অ্যাডভাইসে’ যে মোবাইল নম্বর দেওয়া ছিল, তা সুব্রতর। বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, কল্যাণীর ওই সংস্থাটি তাঁর স্ত্রীর বলে স্বীকার করে নিয়েছেন ধৃত। তিনিও সংস্থা পরিচালনার কাজ দেখতেন।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ হওয়ার এক সপ্তাহ পর থেকেই ‘গা ঢাকা’ দেন সুব্রত। কল্যাণী, বিজয়গড়-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় হানা দিয়েও তাঁর খোঁজ মেলেনি। সোমবার সন্ধে থেকেই পুলিশের একটি দল নদিয়া, কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগণার বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি শুরু করে। মঙ্গলবার তাঁর নাগাল মেলে। পুলিশের দাবি, অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ধৃত ও তাঁর স্ত্রীর সংস্থার নামে একাধিক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা ঢোকার কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্তত চার-পাঁচ জনের কাছে তা পাঠানো হয়েছে। ‘অধরা’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী ও তাঁর এক নিকট আত্মীয়র অ্যাকাউন্টেও টাকা ঢুকেছে বলে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন