ঝড়ে গাছ পড়ে মৃত্যু

মঙ্গলবার বিকেল ৫টা নাগাদ ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। তখন আদালত চত্বরে একটি সেরেস্তায় ছিলেন দুই আইনজীবী ও চার যুবক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৮ ০২:১৩
Share:

 দাপট: ঝড়ে ভেঙেছে চাল, মোটরবাইক। নিজস্ব চিত্র

সকাল থেকে গরমে হাঁসফাঁস। বিকেলে মিনিট সাতেকের ঝড়ে তছনছ হয়ে গেল কালনা মহকুমার বহু এলাকা। গাছ চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে কালনা আদালতের এক আইনজীবী, মহম্মদ আসিফ শেখের (২৭)। দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে ঝড়ের মধ্যে পড়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন আর এক প্রৌঢ় আবদার গাইন (৫৫)। ভেঙেছে বেশ কিছু বাড়িও।

Advertisement

প্রশাসনের দাবি, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর গাছ সরাচ্ছে রাস্তা থেকে। ক্ষতির তালিকাও করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার বিকেল ৫টা নাগাদ ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। তখন আদালত চত্বরে একটি সেরেস্তায় ছিলেন দুই আইনজীবী ও চার যুবক। দুই আইনজীবীর কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। বাড়ি রওনা দেওয়ার আগে ঝড় শুরু হয়ে যায়। ঘরে বসে থাকা অবস্থায় ভেঙে পড়ে একটি পুরানো শিরিষ গাছ। তাতেই মাথায় মারাত্বক চোট লাগে আসিফ শেখের। অচৈতন্য অবস্থায় কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় কালনা ২ ব্লকের পাতিলপাড়ার ওই আইনজীবীকে। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে জানান। সেরেস্তায় তাঁর পাশেই ছিলেন আর এক আইনজীবী পিনাকীবাবু। গাছের আঘাতে তাঁর পা ভেঙেছে। আরও গাছ ভেঙে নষ্ট হয়েছে বেশ কয়েকজন আইনজীবীদের সেরেস্তা, দোকান।

Advertisement

কালীনগর এলাকায় ঝড় শুরু হওয়ার মুখেই দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন আবদার গাইন। তাঁর পরিবারের দাবি, ভয় পেয়ে পড়ে যান তিনি। রাস্তায় গাছ পড়ে থাকায় দেরি হয় হাসপাতালে পৌঁছতে। পরে চিকিৎসকেরা জানান, হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

কালনা ষ্টেশনে ঢোকার মুখে বাসুদেব সাহার মোটরবাইক গ্যারাজে ভেঙে পড়েছে একটি গাছ। বহু মোটরবাইক ভেঙেছে। কালনা ২ ব্লকের পূর্বসাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের রামকৃষ্ণপল্লিতেও ব্যাপক ঝড় হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় বাড়িতে রান্না করছিলেন এক মহিলা। আচমকা গাছ পড়ে আগুন লেগে যায় ঘরে। স্থানীয় বাসিন্দাদের চেষ্টায় ওই ঘর থেকে বাইরে বের করে আনা হয় চার জনকে। চকবাজার এলাকায় কাপড়পট্টিতে গাছ ভেঙে পড়ায় নষ্ট হয়েছে বেশ কিছু দোকান।

পূর্বস্থলী ১ ব্লকের দোগাছিয়া, বগপুর এলাকায়, এসটিকেকে রোডের নানা জায়গাতেও গাছ ভেঙেছে। উপড়ে গিয়েছে বহু বিদ্যুতের খুঁটি। এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেড়তলা, ফলেয়া সহ বহু এলাকা বিদ্যুৎহীন। কিছু জায়গায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে।’’

কৃষি দফতরের দাবি, মন্তেশ্বর এলাকায় ক্ষতি হয়েছে বোরো চাষে। ঝরেছে বহু আম। মহকুমার এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘বোরো ধান পেকে গিয়েছে। চাষিরা তা কেটে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। এই সময় পূর্বস্থলী ১, ২ এবং মন্তেশ্বরে ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলেছে।’’ তবে এই বৃষ্টি পাট ও তিল চাষে কাজে আশবে বলেও তাঁর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন