weather

Onion: জলে গেল সব, পেঁয়াজ-আনাজ নিয়ে ভাবনা

অতিবৃষ্টির জেরে এ বার আগেও নষ্ট হয়েছে আনাজের গাছ। পুজোর মুখে শীতকালীন আনাজ তৈরি করতে পারেননি জেলার বহু চাষি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২১ ০৭:০৯
Share:

পেঁয়াজের বীজতলা বাঁচাতে প্লাস্টিকের আচ্ছাদন, কালনায়। নিজস্ব চিত্র।

জমাট বাঁধা মেঘ। কখনও ঝিরঝিরে, কখনও অঝোর বৃষ্টি। আবহাওয়ার এমন গতিপ্রকৃতি ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করেছে জলদি প্রজাতির ধান ও আনাজ চাষে। চিন্তায় রয়েছেন পেঁয়াজ চাষিরাও। কৃষি দফতরের দাবি, এখনও ক্ষতি সে ভাবে বোঝা যাচ্ছে না। তবে সতর্ক না থাকলেই বিপদ।

Advertisement

অতিবৃষ্টির জেরে এ বার আগেও নষ্ট হয়েছে আনাজের গাছ। পুজোর মুখে শীতকালীন আনাজ তৈরি করতে পারেননি জেলার বহু চাষি। দাম বেড়েছে আনাজের। কালনার চকবাজার, পূর্বস্থলীর কালেখাঁতলার মতো পাইকারি বাজারগুলিতে উৎসবের মুখে আনাজের জোগান কমেছে অনেকটাই। চাষিদের দাবি, রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া নিম্নচাপের বৃষ্টিতে আরও ক্ষতি হবে আনাজে।

পূর্বস্থলীর আনাজ চাষি সুখদেব মালিক বলেন, ‘‘লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজো, ছট, ভাইফোঁটার মতো উৎসবে আনাজের প্রচুর চাহিদা থাকে। কিন্তু যা পরিস্থিতি, তাতে ফুলকপি, বেগুন, পটল, করলা, ঝিঙের জমিতে জল জমে আরও ক্ষতি হয়ে যাবে।’’ আর এক আনাজ চাষি সমীর কর্মকারেরও দাবি, ‘‘বার বার বৃষ্টি এবং স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া চলায় গোঁড়াপচা রোগ ছড়িয়ে পড়ছে জমিতে। আবার ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে আনাজের গাছ বাঁচাতে গিয়ে চাষের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। নতুন চারাও তৈরি করা যাচ্ছে না।’’

Advertisement

কালনা মহকুমার বড় এলাকা জুড়ে ‘সুখসাগর’ প্রজাতির পেঁয়াজ চাষ হয়। সম্প্রতি নাগরগাছি, ধাত্রীগ্রাম, দুর্গাপুর, নান্দাই, কোয়ালডাঙা, মিরপুর এলাকায় চাষিরা পেঁয়াজের বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন। তাঁদের দাবি, ২,২০০ থেকে ২,৪০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজের বীজ কিনতে হয়েছে। এর পরে জমি তৈরি, সার, শ্রমিক খরচ মিলিয়ে এক কেজি বীজ পিছু আরও হাজার দেড়েক টাকা খরচ রয়েছে। জল জমে গেলে সবটাই জলে চলে যাবে, আশঙ্কা তাঁদের। কালনা ২ ব্লকের কেলনই গ্রামের পেঁয়াজ চাষি মুকুন্দ সরকার সোমবার জমি থেকে জল বার করতে করতে বলেন, ‘‘সপ্তাহখানেক আগে দশ কেজি পেঁয়াজের বীজ ফেলেছি। চারাও বেরোতে শুরু করেছিল। এমন আবহাওয়া থাকলে সব পচে যাবে।’’ পেঁয়াজ চাষি শরৎ চাল, দিবাকর চাল, বলাই দাস, তাপস দাস, বাবলু দাসেরাও জানান, তাঁরা কেউ ছ’কেজি, কেউ ১৬ কেজি বীজ ফেলেছেন। টানা দুর্যোগ চললে, সব নষ্ট হয়ে যাবে। আবার নতুন করে জমি তৈরি করে বীজ ফেলতে হলে আর্থিক ক্ষতি তো হবেই, চাষের সময়ও পিছিয়ে যাবে।

জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘দুর্যোগ চলাকালীন বার বার পেঁয়াজ চাষিদের জমি পরিদর্শন করতে হবে। বীজতলায় কোনও মতে জল জমতে দিলে হবে না।’’ তিনি জানান, এই সময় থেকে চাষিরা রবি মরসুমের ডাল এবং তৈলবীজ চাষের জন্যও জমি তৈরি শুরু করেন। বৃষ্টিতে থমকে রয়েছে সেই কাজও।

জেলায় এ বার আমন চাষ হয়েছে ৩ লক্ষ ৭৯ হাজার হেক্টর জমিতে। সাধারণত কালনা, মেমারির মতো কিছু এলাকা, যেখানে আলু চাষ বেশি হয় সেখানে চাষিরা কিছুটা আগে আমন ধান চাষ করেন। আবার মন্তেশ্বরের মতো কয়েকটি ব্লক আমন চাষ দেরিতে হয়। জেলার ডেপুটি ডিরেক্টর (কৃষি) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রায়না-সহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরেছি। এখনও ধানের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে যে সমস্ত জমিতে ধান পাকতে শুরু করেছে সেখানে দমকা হাওয়াই ধান ঝরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement