কুলটির চিনাকুড়িতে শুক্রবার মাঝ রাতে এই মঞ্চেই নাচগান চলছিল।
বিয়েবাড়ি উপলক্ষে মঞ্চ বেঁধে নাচগানের ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু গভীর রাতে সেখানে অশালীন নাচের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলেন কিছু প্রতিবেশী। শুক্রবার রাতে কুলটির চিনাকুড়িতে ধুন্ধুমার বেঁধে যায় সে নিয়ে। বচসা থেকে মারপিট, এমনকী বিয়েবাড়িতে আসা লোকজন গুলি চালায় বলে অভিযোগ। এক মহিলা-সহ দু’জন গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তেরা পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চিনাকুড়ি ২ নম্বর এলাকার মহাবীর ধাওড়ার বাসিন্দা অমলেশ নিরালা নুনিয়ার বাড়িতে শুক্রবার একটি বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। বরযাত্রীরা এসেছিলেন উত্তর প্রদেশের জাহানাবাদ থেকে। তাঁদের মনোরঞ্জনের জন্য পারিবারিক রীতি মেনে বিয়েবাড়িতে একটি নাচগানের আসর বসানো হয়। রাত দেড়টা নাগাদ বড় বক্স বাজিয়ে শুরু হয় নাচগানের অনুষ্ঠান। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, প্রকাশ্যেই অশালীন নাচ শুরু হয়। তা দেখে প্রতিবাদ করেন এলাকার বেশ কিছু মানুষজন।
ওই প্রতিবেশীরা দাবি করেন, পড়ার মধ্যে এই ধরনের আসর চলবে না। অবিলম্বে তা বন্ধ করতে হবে। কিন্তু বিয়েবাড়ির লোকজন তা বন্ধ করতে রাজি হননি। সে নিয়ে দু’পক্ষের বচসা বাধে। অভিযোগ, এর মধ্যেই প্রায় জনা তিরিশ লোক আচমকা লাঠি, বাঁশ, রড নিয়ে প্রতিবাদ করতে যাওয়া পড়শিদের উপরে হামলা চালায়। ভিড়ের মাঝে এলোপাথাড়ি গুলিও ছোটে। গুলিবিদ্ধ হন সুমিত্রা দেবী নামে এক প্রৌঢ়া ও রাজকুমার সিংহ নামে এক যুবক। বাঁশ, রডের ঘায়ে জখম হয়েছেন আরও কয়েক জন। গুলিবিদ্ধ দু’জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারাই আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আসানসোল হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ যুবক। শনিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
গণ্ডগোলের খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। কিন্তু পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তার আগেই এলাকা ছেড়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। এমনকী, অনুষ্ঠান বাড়ির লোকজনও এলাকা ছেড়ে পালান। শনিবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্তদের কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। যে বাড়িতে অনুষ্ঠান ছিল সেই পরিবারের লোকজনও এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, অনুষ্ঠানে আসা বরযাত্রীদের কাছেই বন্দুক ছিল। তা থেকেই ছররা ছোড়া হয়। পুলিশ যদিও জানায়, এই বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। অস্ত্রগুলির খোঁজ চলছে। এডিসিপি (সেন্ট্রাল) বিশ্বজিৎ মাহাতা বলেন, ‘‘অপরাধীদের ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে।’’
শুক্রবার গভীর রাতের এই ঘটনা নিয়ে শনিবার দিনভরও চিনাকুড়িতে চাপা উত্তেজনা ছিল। এলাকায় দফায়-দফায় পুলিশি টহল চলে। পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।