Potato

অর্ধেক আলুই পড়ে হিমঘরে, বাড়ছে চিন্তা

কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিক প্রবীরকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘মার্চ থেকে হিমঘরে আলু মজুত হয়। দু’এক মাস পর থেকেই আলু বার হতে থাকরে। নভেম্বরের মধ্যে সব আলু বার করে দিতে হয়।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২২ ০৯:২১
Share:

মরসুমে প্রথমে দুর্যোগে আলু চাষ পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন চাষিরা। মরসুমের শেষ লগ্নে আবার হিমঘরে আলু উপচে পড়ছে। গত কয়েক মাসে হিমঘরে মজুত আলুর ৫০ শতাংশ মাত্র বাজারজাত হয়েছে। মরসুম শেষ হতে সরকারি ভাবে দেড় মাস বাকি। এর মধ্যে বাকি আলুর ঠিক দামে বিক্রি করা যাবে, না কি অভাবী-বিক্রি করতে হবে, তা নিয়ে চিন্তায় সব মহল।

Advertisement

কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিক প্রবীরকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘মার্চ থেকে হিমঘরে আলু মজুত হয়। দু’এক মাস পর থেকেই আলু বার হতে থাকরে। নভেম্বরের মধ্যে সব আলু বার করে দিতে হয়। সেই হিসেবে সাড়ে ছ‌য়-সাত মাসে জেলায় মজুত আলুর ৫০ শতাংশ বাজারজাত হয়েছে। বাকি আলু নিয়ে চিন্তা থেকেই গেল।’’ ওই দফতর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ১০ লক্ষ ৫৭ হাজার ৪৯৬ টন আলু মজুত হয়েছিল। মঙ্গলবার পর্যন্ত হিমঘর থেকে তার ৫০.৩ শতাংশ আলু বাজারজাত হয়েছে।

জেলায় সাধারণত প্রতি বিঘায় ১০০ থেকে ১২০ প্যাকেট আলু হয়। সেখানে গত মরসুমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে দক্ষিণবঙ্গে দু’বার করে চাষ করতে হয়। ফলন অর্ধেকে নেমে গিয়েছিল। আলুর মানও ভাল হয়নি। ব্যবসায়ীদের দাবি, মান ভাল না হওয়ায় অসম, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে আলু পাঠানো যায়নি। সেই বাজার দখল করে নিয়েছে উত্তরপ্রদেশের আলু। ব্যবসায়ীদের একাংশ বলেন, ‘‘আমাদের আলুর গুণগত মান খারাপ। তার উপরে এক-একটি আলুর প্যাকেটের দাম পড়ে যাচ্ছে ১১০০-১২০০ টাকা। সেখানে উত্তরপ্রদেশের আলু বিক্রি হয়েছে সব মিলিয়ে ৮০০-৮৫০ টাকায়। পূর্ব বর্ধমানেও উত্তরপ্রদেশের আলু দেদার বিক্রি হচ্ছে। তার সঙ্গে জুটেছে উত্তরবঙ্গের আলু।’’ সেই কারণেই হিমঘরে আলু রয়ে যাচ্ছে, দাবি তাঁদের।

Advertisement

‘প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী’ সংগঠনের জেলা সম্পাদক জগবন্ধু মণ্ডল বলেন, ‘‘ভিন্‌ রাজ্যে আলু যায়নি। আবার বাইরের আলু জেলায় ঢুকেছে। সে কারণেই হিমঘরে আলু রয়েছে। নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে সব আলু বার করা যাবে না। অভাবী বিক্রি যাতে না হয়, দেখতে হবে।’’

আবার ব্যবসায়ী থেকে চাষিদের একটা অংশের দাবি, পঞ্জাব থেকে উত্তরপ্রদেশ পর্যন্ত বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হচ্ছে। সেখানেও আলু চাষ পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে আলু হিমঘরে রেখে কেউ কেউ ফাটকা খেলতে চাইছেন। হিমঘর-ব্যবসায়ীদের সংগঠনের কর্তাদের যদিও দাবি, ‘‘দাম বাড়বে এই আশায় ফাটকা খেলার সম্ভাবনা একদমই নেই। যত দিন যাবে, আলুর বাজার পড়তে থাকবে।’’ কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন বাজারে ২৬ থেকে ২৮ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি হচ্ছিল। বুধবার থেকে কেজিতে এক টাকা কমেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন