যানজটে: উখড়ায়। নিজস্ব চিত্র
দিনের ব্যস্ত সময়। মিনিবাসে চড়ে স্কুলে যাচ্ছিল এক ছাত্র। স্কুলে পরীক্ষা রয়েছে। আচমকা বিপত্তি। সামনের রাস্তা প্রায় বন্ধ। যানজটে। অথচ মোড়ের এক দিকে ঠাই দাঁড়িয়ে রয়েছেন ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মী। বাসিন্দাদের অভিযোগ, অন্ডাল-মাধাইগঞ্জ রোডের উপরে উখড়ার বাজপেয়ী মোড়ে প্রতি দিনের ভোগান্তির ছবিটা এমনই। এর জেরে প্রায়শই ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে। বাসিন্দাদের দাবি, ব্যস্ত সময়ে বন্ধ হোক পণ্যবোঝাই ট্রাক, গাড়ির যাতায়াত।
প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রাস্তা দিয়ে ফি দিন ৬০টিরও বেশি মিনিবাস যাতায়াত করে। এ ছাড়া পণ্যবোঝাই ট্রাক, কয়লাবোঝাই ডাম্পার, জলের ট্যাঙ্কার-সহ নানা শিল্প সংস্থার গাড়িও এই মোড় দিয়ে যাতায়াত করে। উখড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র এই মোড়ে বাসও দাঁড়ায়। ফি দিন ৫০টির বেশি ট্রাক পাণ্ডবেশ্বরের অজয় ঘাট থেকে বালি নিয়ে কুমারডিহি, বাঁকোলা হয়ে এই মোড় দিয়েই মাধাইগঞ্জ থেকে অন্ডালের রাস্তা ধরে নানা কোলিয়ারিতে যায়। এর ফলে নিত্য দিন যানজট লেগেই থাকে এই মোড়ে।
এই মোড়ে দুর্ঘটনাও ঘটেছে বহু বার। বছর খানেক আগে রাস্তা পার হতে গিয়ে দু’জন ছাত্র ও এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। বাঁকোলা দুর্গা মন্দিরের সামনে মৃত্যু হয় উখড়া কেজি ইনস্টিটিউশনের এক ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়ার। বাজপেয়ী মোড়ে মিনিবাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় পিজি বালিকা মন্দিরের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীর। কুমারডিহি রোড ধরে সাইকেলে চড়ে বাড়ি ফেরার সময়ে ট্রাকের ধাক্কায় মারা যায় একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র।
আরও পড়ুন...
অটো-সমস্যা মেটাতে নথি জমা শহরে
অভিভাবকদের অভিযোগ, দিনের ব্যস্ত সময়ে ভারী যান চলাচল বন্ধ রাখতে প্রশাসনের কাছে বহু বার আর্জি জানানো হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। স্থানীয় তৃণমূল নেতা দীপক ঘোষ জানান, বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি উখড়া ফাঁড়িতে স্মারকলিপি দিয়ে দাবি করা হয়েছে, দিনের ব্যস্ত সময়ে এবং মঙ্গল, শনিবার উখড়ায় হাটবারের সময়ে ভারী যান চলাচল বন্ধ করা হোক।
যানজট, দুর্ঘটনা নিয়ে চিন্তায় স্কুলের শিক্ষকেরাও। কেবি ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পূর্ণচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, “অনেক পড়ুয়াই সাইকেলে চড়ে স্কুলে আসে। বিপদের আশঙ্কায় দুঃশ্চিন্তায় থাকি।’’ অন্ডালের বিডিও মানস পান্ডার যদিও আশ্বাস, ‘‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে।’’