খন্দ: এমনই হাল এমএএমসি টাউনশিপের রাস্তাগুলির। নিজস্ব চিত্র
কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে ২০০২ সালে। তারপরে দুর্গাপুরের এমএএমসি টাউনশিপের অধিকাংশ রাস্তারই আর সংস্কার আর হয়নি বলে অভিযোগ। টাউনশিপের বাসিন্দা কারখানার প্রাক্তন শ্রমিক-কর্মীদের অভিযোগ, রাস্তা সংস্কারে বহু বার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি। এ ছাড়া ক্ষোভ রয়েছে সাফাই নিয়েও।
১৯৬৫ সালে দুর্গাপুরে রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা এমএএমসি তৈরির পরে পুরসভার মূলত ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে টাউনশিপটি তৈরি হয়। ২০০২-এ কারখানা বন্ধের পরে টাউনশিপেরও সুদিন যায়। বন্ধ হয়ে যায় হাইস্কুল, হাসপাতাল। বর্তমানে ৪২৫৩টি আবাসনের মধ্যে ২৪৯৪টিতে প্রাক্তন শ্রমিক-কর্মীদের পরিবার রয়েছে। ফাঁকা আবাসনগুলির দরজা-জানালাও চুরি হয়ে গিয়েছে। চার দিকে গজিয়েছে ঝোপ-জঙ্গল। এর পাশাপাশি সংস্কার না হওয়ায় রাস্তা দিয়ে চলাচল করতেও সমস্যা হচ্ছে বলে জানান বাসিন্দারা।
কী রকম? পুরসভার তিন নম্বর বরো অফিস রয়েছে টাউনশিপে। এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ওই বরো অফিসের সামনের রাস্তাটি ভাঙা। মোটরবাইক তো দূর, সাইকেল নিয়েও ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা কঠিন। অথচ, টিকাকরণ-সহ পুরসভার নানা কাজে এই বরো অফিসে বহু মানুষকে আসতে হয়। এ ছাড়া অদূরেই রয়েছে নিউ টাউনশিপ থানা, ‘এক্সপার্ট হস্টেল’। টাউনশিপের যাবতীয় সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠান হয় ‘এক্সপার্ট হস্টেলে’ই। পুরসভার বেশ কিছু ওয়ার্ডের বাসিন্দারা মামরা বাজারে যান এই রাস্তাটি ধরেই।
এমন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি কারখানা বন্ধ হওয়ার পরে থেকে আর সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ। টাউনশিপের বহু নর্দমা নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় নোংরা জল রাস্তায় উপচে বিপত্তি বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, সাগর সেনরা।
টাউনশিপের ভিতরের প্রায় সমস্ত ‘স্ট্রিট’ বেহাল। কী রকম? বাসিন্দারা জানান, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বি২, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বি১ ও সিডি টাইপ আবাসনের সামনের ‘স্ট্রিট’ বেহাল বহু বছর। অথচ, টাউনশিপের বাসিন্দারা ছাড়াও শহরের অন্যান্য এলাকার অনেকেও গাড়ি, মোটরবাইক নিয়ে রাস্তাগুলি ব্যবহার করেন।
এ ছাড়া ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে এমএএমসি মডার্ন স্কুলের পাশ দিয়ে বিওজিএল কলোনি যাওয়ার রাস্তা ও সরকারি মহাবিদ্যালয় যাওয়ার রাস্তার পিচ প্রায় পুরো উঠে গিয়ে পাথর বেরিয়ে গিয়েছে। একই হাল ফুলঝোড়ের কাছে একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে বি ১, এ টাইপ হয়ে মামরা বাজার বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটিরও। ফুলঝোড় মোড় হয়ে শরৎপল্লি, সুকান্তপল্লি হয়ে মামরা বাজার যাওয়ার রাস্তাটিও খন্দে ভরেছে।
বাসিন্দাদের ক্ষোভ, গত ১৫ বছরে বাস চলাচলের প্রধান রাস্তাটি ছাড়া টাউনশিপের অন্য কোনও রাস্তা সংস্কার হয়নি। ফলে প্রায়শই হোঁচট খেতে হয় বাসিন্দাদের।
দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদ (সড়ক) অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের যদিও দাবি, ‘‘টাউনশিপের বেশ কিছু রাস্তা সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বরো কার্যালয়ের সামনের রাস্তাটির সংস্কারের জন্য প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এ ছাড়াও আরও কিছু রাস্তা দ্রুত সংস্কার হবে।’’