গণপিটুনির প্রতিবাদে সজাগ হওয়ার বার্তা

মঙ্গলবার রাতে চোর সন্দেহে গণপিটুনি, পরে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। মারা যান মেমারিরই বাসিন্দা উদয় মণ্ডল। ওই দিনই অভিযুক্ত হাসপাতাল পাড়ার তিন ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেমারি শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

গণপিটুনির জেরে ‘খুন’ নিয়ে সরব মেমারি শহর। শিক্ষক থেকে ব্যাঙ্ককর্মী, গৃহবধূ থেকে কলেজ ছাত্রী সবারই দাবি, “সন্দেহ হলে পুলিশকে জানানো যথেষ্ট, সেখানে এক জনকে পিটিয়ে খুন করে ফেলা মানা যায় না।’’ এতে শহরেরও বদনাম হচ্ছে, দাবি তাঁদের।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে চোর সন্দেহে গণপিটুনি, পরে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। মারা যান মেমারিরই বাসিন্দা উদয় মণ্ডল। ওই দিনই অভিযুক্ত হাসপাতাল পাড়ার তিন ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু উন্মত্ত আচরণের কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেন, উদয়বাবু ভবঘুরের মতো রাস্তাতেই ঘুরতেন দিনরাত। পরিবার বলতে তেমন কেউ ছিল না। চেয়েচিন্তে খাবার খেতেন। নেশাচ্ছন্ন অবস্থাতেও দেখা যেত তাঁকে। কিন্তু সন্দেহের বশে এমন আক্রোশ সমর্থন করছেন না কেউ।

বৃহস্পতিবার মেমারির ইন্দ্রপ্রস্থ পাড়ার বাড়িতে মায়ের শ্রাদ্ধের কাজে হাজির থাকার জন্য এক দিনের প্যারোলে মুক্তি পান ঘটনার মূল অভিযুক্ত প্রশান্ত মণ্ডল। এ দিন তিনি ঘনিষ্ঠ মহলে দাবি করেন, ওই ঘটনায় তাঁর যোগ নেই। যদিও পুলিশের দাবি, সিসিটিভির ফুটেজে তাঁকে দেখা গিয়েছে। প্রশান্তবাবু ছাড়াও হাসপাতাল পাড়ার আরও দুই ব্যবসায়ী কবিপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায় ও শেখ মুমতাজ আলিকেও দেখা গিয়েছে, পুলিশের দাবি। বুধবার আদালতে প্রশান্তবাবু ও মুমতাজকে সাত দিন হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেছিল পুলিশ। তার শুনানি হবে আজ, শুক্রবার।

Advertisement

দুপুরে হাসপাতাল পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, এলাকা থমথমে। পুলিশের মোটরবাইক টহল দিচ্ছে। এক বস্ত্র ব্যবসায়ীকেও এ দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মৃতের এক আত্মীয় মামন মণ্ডলের দাবি, “দোষীরা কঠোর শাস্তি পেলেই এ ধরনের ঘটনা কমবে।’’ মেমারির বাসিন্দা দিলীপ মুখোপাধ্যায়, মেমারি কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস চক্রবর্তীদেরও দাবি, সজাগ থাকতে হবে। সঙ্গে জোরালো প্রতিবাদও করতে হবে। কলেজের ছাত্রী সুচন্দনা হাজরা, গৃহবধূ মধুমিতা রায়েরাও বলেন, “সভ্য সমাজে এ ধরণের ঘটনা লজ্জার। যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁরাও এলাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। এমন ঘটনায় শহরের বদনাম।’’ মেমারির বাসিন্দা, পেশায় চিকিৎসক অভয় সামন্তেরও দাবি, “সচেতনতা প্রচার, সঙ্গে ভেতর থেকে সচেতন হওয়াটা খুব জরুরি।’’ পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ী বলেন, “বেদনাদায়ক ঘটনা। আমরা কী ভাবে মানুষকে সচেতন করতে পারি, ভাবছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন