বড় হল রেল, সাক্ষী রইল ফুল-সেলফি

দু’বছর পরে ব্রডগেজ ট্রেন ঢুকতেই ফুল, মালায় ঢেকে গেল ট্রেনের ইঞ্জিন। রেললাইনে নেমে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হলেন তরুণ-তরুণীরা। শুক্রবার বলগনা থেকে শ্রীপাট শ্রীখণ্ড পর্যন্ত এমনই দৃশ্যের সাক্ষী রইলেন বহু মানুষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৭ ০০:৪৬
Share:

সরগরম: ট্রেন ঢুকতেই এক দিকে নাচ, অন্য দিকে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

ফুল, ঘটে সাজানো স্টেশন চত্বর। ব্রতচারী ও আদিবাসী নাচের দলও তৈরি। ঘড়িতে দুপুর ৩টে ২০ বাজতেই উল্লাসে ফেটে পড়ল শ্রীপাট শ্রীখণ্ড স্টেশন চত্বর।

Advertisement

দু’বছর পরে ব্রডগেজ ট্রেন ঢুকতেই ফুল, মালায় ঢেকে গেল ট্রেনের ইঞ্জিন। রেললাইনে নেমে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হলেন তরুণ-তরুণীরা। শুক্রবার বলগনা থেকে শ্রীপাট শ্রীখণ্ড পর্যন্ত এমনই দৃশ্যের সাক্ষী রইলেন বহু মানুষ।

এ দিন দুপুর দুটোয় বর্ধমান থেকে ১২কোচের ট্রেনটি ছাড়ে। শ্রীখণ্ড পৌঁছনোর পরে ৪.১০ মিনিটে ফের ট্রেনটি বর্ধমানের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সাড়ে পাঁচটায় বর্ধমান পৌঁছয়। স্টেশন মাস্টার অমিতকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘আপাতত শ্রীখণ্ড থেকে একটি ট্রেন আপ-ডাউন চলবে।’’

Advertisement

পূর্ব রেল সূত্রে জানা যায়, ২৪৬ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বছর দুয়েক আগে বলগোনা থেকে কাটোয়া পর্যন্ত ২৭.২২ কিলোমিটার রেললাইনের গেজ পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়। বরাদ্দ অর্থের মধ্যে ১০ কোটি টাকা দেয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম। ১১২ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা দেয় এনটিপিসি। ২০১২-এর ২৮ জুলাই থেকে বর্ধমান থেকে বলগোনা পর্যন্ত লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ২০১৪ পর্যন্ত বর্ধমান থেকে বলগোনা পর্যন্ত ব্রডগেজে এসে বলগোনা থেকে ছোট রেলে তড়ে কাটোয়া যেতে হতো যাত্রীদের। ২০১৪-র ১ ডিসেম্বর বলগোনা থেকে কাটোয়া পর্যন্ত ন্যারোগেজ ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়। কাজ শুরু হয় বলগোনা থেকে কাটোয়া ব্রডগেজের।

এ দিন বলগোনা থেকে শ্রীপাট শ্রীখণ্ড পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও বাকি রয়েছে কাটোয়া পর্যন্ত ৭.২১ কিলোমিটার। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকরিক রবি মহাপাত্রের দাবি, শ্রীখণ্ড থেকে কাটোয়া পর্যন্ত বেশ কিছু জায়গায় সিগন্যালিংয়ের কাজ বাকি। এ ছাড়াও টিকিট সিস্টেম সার্ভার বসানোর কাজ কিছু বাকি রয়েছে। আলো লাগানোর কাজও প্রায় শেষ পথে। সেপ্টেম্বরের শেষেই কাটোয়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে বলে আশাবাদী তিনি। উদ্বোধনের দিন পূর্ব রেলের কোনও আধিকারিক না এলেও এসেছিলেন এনটিপিসির ডিজিএম দেবাশিস চক্রবর্তী, সিনিয়র ম্যানেজার প্রণবেন্দু নাথ। হাজির ছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান দীপক মজুমদার। স্টেশন চত্বরে এ দিন ছিল হাজার চারেকের ভিড়।

প্রথম ব্রডগেজ ট্রেনের সাক্ষী হয়ে আসা খাজুরডিহির রবীন্দ্রনাথ পাল, কাটোয়ার প্রবীরকুমার দাসেরা বলেন, ‘‘গোটা চাকরি জীবন ট্রেনের অপেক্ষা করতেই কেটে গেল। এ যেন এক রকম স্বপ্নপূরণ। এখন কাটোয়া পর্যন্ত ট্রেন চালু হলেই সোনায় সোহাগা।’’ নিত্যযাত্রীদের দাবি, কাটোয়া থেকে বর্ধমান পর্যন্ত বাসে ভাড়া ট্রেনের প্রায় তিন গুণ। বাসে যাতায়াতও কষ্টকর। আবার সময়ও বেশি লাগে। ট্রেন হওয়ায় সব সমস্যা মিটবে বলেই মত নিত্যযাত্রী সোমেন ধর, মৃদুলা মাঝিদের। ডিভিশনাল রেলওয়ে ইউজার্স কনসালটেটিভ কমিটির (হাওড়া ডিভিশন) সদস্য, নিরোলের বাসিন্দা আশিস রায় বলেন, ‘‘১০বছর আগে লালুপ্রসাদ যাদব এই ব্রডগেজের শিলান্যাস করেছিলেন। এত দিনে তা বাস্তবায়িত হল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন