Arrest: চঞ্চল খুনে ভিন্‌-রাজ্য থেকে ধৃত দুই

তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতেরা খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছিল। ঘটনাস্থল থেকে তা উদ্ধারও হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি।

তৃণমূল প্রধানের ছেলে চঞ্চল বক্সী ‘খুনের’ ঘটনায় ঝাড়খণ্ড থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, প্রাথমিক ভাবে তাঁরা জানতে পেরেছে, ধৃতেরা খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রের জোগান দিয়েছিল। ‘ভাড়াটে খুনি’ হিসাবে পুলিশের খাতায় নামও রয়েছে তাদের। জিজ্ঞাসাবাদের পরে, খুনের ঘটনার জাল অনেকটা গুটিয়ে আনা গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

শুক্রবার বর্ধমান আদালতে তোলা হলে ধৃতদের ছ’দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘‘আরও দু’জনকে ভিন্‌ রাজ্য থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের হেফাজতে নিয়ে কোথায়, কাদের আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

সপ্তাহ দু’য়েক আগে আউশগ্রামের গেঁড়াইয়ে দলের এক নেতার বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করে বাবা শ্যামল বক্সীকে নিয়ে মোটরবাইকে ফেরার সময়ে খুন হন চঞ্চল। তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন, ঘটনায় বিজেপির হাত রয়েছে। পরে, অবশ্য তৃণমূলেরই দুই পঞ্চায়েত সদস্য-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ধৃত মহম্মদ ইনতিয়াজ ওরফে পিন্টু এবং মহম্মদ পাপ্পু বিহারের মুঙ্গের থানার মির্জাপুরের বাসিন্দা। ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার কুন্দাহিট থানা এলাকা থেকে তাঁদের ধরা হয়। আউশগ্রামের গুসকরা ও ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশের দু’টি দল সেখানকার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালায়। জেরায় তাঁদের কাছে ধৃতেরা খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলেও পুলিশের দাবি।

তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতেরা খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছিল। ঘটনাস্থল থেকে তা উদ্ধারও হয়। শের আলি নামে ভিন্‌ রাজ্যের এক বাসিন্দা এই ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলে ধৃতদের দাবি। পুলিশ জানতে পেরেছে, ছ’লক্ষ টাকায় রফা হয়। শের আলি এই ঘটনায় ধৃত দেবশালা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য আসানুল মণ্ডলের পূর্ব পরিচিত বলেও দাবি তদন্তকারীদের। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরায় তাঁদের জানিয়েছে, খুনের পরবর্তী রাজনৈতিক বা পুলিশের ঝামেলা প্রভাব কাটিয়ে সামলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল আসানুল। শের আলির খোঁজ মিললে তদন্তের ‘জট’ আরও খুলে যাবে বলেও পুলিশের দাবি।

নিহত চঞ্চলের বাবা শ্যামলবাবু যেখানকার প্রধান, সেই দেবশালা পঞ্চায়েতেরই সদস্য ধৃত আসানুল ও মনির হোসেন মোল্লা। আর এক জন বিশ্বরূপ মণ্ডল তৃণমূলের দেবশালা অঞ্চল সভাপতি হিমাংশু মণ্ডলের ছেলে। সপ্তাহখানেক আগেই ওই তিন জনকে ধরে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, বার বার প্রধান ও তাঁর ছেলের সঙ্গে বিবাদে নাম জড়িয়েছে আসানুলের। গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে, শ্যামলবাবু ও চঞ্চলকে দেবশালা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মারধরের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েতে একশো দিনের কাজের সুপারভাইজ়ার নিয়োগ, টেন্ডার সংক্রান্ত গোলমালের জেরে তিনি চঞ্চলকে খুন করার পরিকল্পনা করেন বলেও পুলিশের একাংশের অনুমান।

বিজেপির বর্ধমান সদর জেলা সম্পাদক শ্যামল রায়ের দাবি, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই দাবি করেছিলাম, এই খুন টেন্ডার সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে ঘটেছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের লোকজন জড়িত। মাথাদের ধরার দাবি জানাচ্ছি।’’ তৃণমূলের আউশগ্রাম ২ ব্লক সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষ শুক্রবার বলেন, ‘‘চঞ্চল খুনে দলে সাংগঠনিক ভাবে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। খুনের তদন্তে প্রশাসনের উপরে পুরোপুরি ভরসা ছিল। একের পের এক জড়িতদের গ্রেফতারে তা প্রমাণ হচ্ছে। আশা করি, মূল ষড়যন্ত্রকারীরাও খুব শীঘ্র সামনে আসবে এবং দোষীরা সাজা পাবে।’’

শ্যামলবাবু এ দিন বলেন, ‘‘পুলিশের তদন্তে যে ভাবে খুনিরা একের পর এক ধরা পড়ছে তাতে আমরা খুশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন