পথ-দুর্ঘটনা রুখতে বুধবারও দিনভর ‘নাকা’ জারি থাকল দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে। এ দিনও পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল ওই রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ি পরীক্ষা করেন। শুধু ওই রাস্তা নয়, এ দিন জেলা জুড়ে বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশ গাড়ি আটকে নথি পরীক্ষা করে দেখেছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (বর্ধমান সদর) দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “সাংবাদিক নয়, তবুও প্রেস স্টিকার লাগানো গাড়িতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
পুলিশের তৎপরতার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সে নিয়ে বর্ধমান জেলাশাসকের দফতরে বৈঠক হয়। সেখানে জেলা পুলিশ, পরিবহণ দফতর, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ থেকে বাস-মিনিবাস সংগঠনের কর্তারা হাজির ছিলেন। এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, পথ নিরাপত্তা নিয়ে মহকুমাস্তর পর্যন্ত আলোচনাসভা হবে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন মোটর ট্রেনিং স্কুলগুলিকে নিয়ে সচেতনতা শিবির করা হবে। স্কুল পর্যায়েও সচেতনতা শিবির করা হবে বলে পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানান। জাতীয় সড়কে জোরে গাড়ি চলাচল রুখতে পুলিশকে আরও কড়া হওয়ার জন্যেও এ দিনের বৈঠকে বলা হয়েছে।
জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার ব্যাপারে হাসপাতাল বা নার্সিংহোম কোনও গড়িমসি না-করে তার জন্যেও ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্টদের হেনস্থা হতে হয়, এমন কথাও আলোচনায় উঠে আসে। এ দিন সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে সব পক্ষকেই বলেন জেলাশাসক।
গত কয়েক দিন ধরে বর্ধমান সংলগ্ন এলাকায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর বারবার দুর্ঘটনা চিন্তায় রাখছে নবান্নের কর্তাদের। নবান্নের নির্দেশ রয়েছে, বর্ধমান শহরের উপর গাড়ির চাপ কমাতে হবে। সেই মতো সোমবার দিনভর বর্ধমানমুখী গাড়িগুলিকে ১৫ মিনিট করে আটকে রেখে তবে ছাড়ছিল মেমারি। ওই রাত থেকে গাড়ি নথি, সিটবেল্ট বা চালকেরা হেলমেট পড়েছে কি না দেখায় আরও জোর দেওয়া হয়। জোরে গাড়ি চালানোর জন্যে পুলিশ জরিমানাও আদায় করে। তাতেই লালবাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে কলকাতা থেকে পুরুলিয়া যাওয়ার পথে আটকে শ্রীঘরে ঠাঁই হয় তিন জনের। জামালপুর থানার পুলিশও জাতীয় সড়কে বেপরোয়া ভঙাবে গাড়ি চালানোর জন্য চার জনকে গ্রেফতার করেছে। বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল জানান, গত তিন দিন ধরে অভিযান চালিয়ে ১৩ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।