থানায় ডেকে সাহায্য, ভয় ভাঙল ছাত্রীর

এ বছর জেলার সেরা দশ কন্যাশ্রীর সে এক জন। বৃহস্পতিবার তাকে থানায় ডেকে ফুটবল, স্কিপিংয়ের দড়ি ও পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন মঙ্গলকোটের ওসি প্রসেনজিৎ দত্ত। যে কোনও সমস্যায় পাশে থাকার আশ্বাসও দিলেন তিনি।

Advertisement

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:৩০
Share:

ওসি-র সঙ্গে দেখা করে বেরোচ্ছে দাসি কিস্কু। নিজস্ব চিত্র

পুলিশের নাম শুনলেই ভয় লাগত। তাই থানার বড়বাবু ডেকেছেন শুনেও গোড়ায় যায়নি সে। শেষমেশ আর এড়িয়ে যেতে পারেনি দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীটি। দুরুদুরু বুকেই হাজির হয়েছিল থানায়। আধ ঘণ্টা পরে যখন বেরিয়ে এল সেখান থেকে, তার মুখেই চওড়া হাসি।

Advertisement

মঙ্গলকোটের তালডাঙা গ্রামের দাসি কিস্কু কাশেমনগর বিএনটিপি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। এ বছর জেলার সেরা দশ কন্যাশ্রীর সে এক জন। বৃহস্পতিবার তাকে থানায় ডেকে ফুটবল, স্কিপিংয়ের দড়ি ও পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন মঙ্গলকোটের ওসি প্রসেনজিৎ দত্ত। যে কোনও সমস্যায় পাশে থাকার আশ্বাসও দিলেন তিনি।

দাসি বলে, “মঙ্গলকোট থানার বড়বাবু ডেকেছিলেন বেশ কিছু দিন আগেই। কিন্তু আমার যাওয়া হয়ে ওঠেনি। পুলিশের নাম শুনলেই ভয় লাগত। তাই এ বার পাশের বাড়ির বাহামনি হাঁসদাকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যাই।’’ সে জানায়, বড়বাবু প্রথমে জানতে চান, সে ফুটবল খেলে কি না। তাকে জড়োসড়ো থাকতে দেখে ওসি আশ্বাস দেন, কোনও ভয় নেই। সব কিছু সে অনায়াসে বলতে পারে। এর পরে পড়াশোনা, খেলাধুলো করতে কোনও অসুবিধা হয় কি না, ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করা হয় কি না, বাড়ি ও স্কুলের কথা— সবই জানতে চান প্রসেনজিৎবাবু। দাসি বলে, ‘‘ঠিকমতো যে খাওয়াদাওয়া হয় না, টিউশন ফি সময় মতো দিতে পারি না, সে কথা জানাই।’’

Advertisement

এ সব শুনে ওসি খেলাধুলোর জিনিসের পাশাপাশি দাসির হাতে তুলে দেন পাঁচ হাজার টাকাও। ভাল ভাবে পড়াশোনা করতেও বলেন। প্রসেনজিৎবাবু বলেন, “ফুটবল আমার প্রথম প্রেম। তাই যখন দাসির কথা শুনেছিলাম, ওর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। ওকে ভাল ভাবে পড়াশোনা করতে বলেছি। স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিতে বলেছি। কী ভাবে ফুটবল অনুশীলন করবে, সে পরামর্শও দিয়েছি।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘অনেক প্রতিভা সুযোগ না পেয়ে অকালেই নষ্ট হয়ে যায়। দাসিকে বলেছি যখন যা দরকার পড়বে, যেন আমাকে বলে। আমি মঙ্গলকোটে না থাকলেও ওর পাশে থাকব।’’

থানা থেকে বেরিয়ে দাসি বলে, “এখন মনে হচ্ছে, কোনও সমস্যা হলে ওঁকে বললেই সমাধান হয়ে যাবে। উনি আমার পাশে আছেন। পুলিশ সম্পর্কে আমার ধারণাটাই ভুল ছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন