দু’দিন ধরেই রাতভর জুয়োর আড্ডা, প্রকাশ্যে অশালীন নাচ চলছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শনিবার রাতে সেই অনুষ্ঠান বন্ধ করতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন পুলিশকর্মীরা। খণ্ডঘোষের শাঁকারি গ্রামের ওই ঘটনায় এক মহিলা পুলিশকর্মী-সহ চার জন জখম হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশের গাড়িও। পরে এক মহিলা-সহ ১০ জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শাঁকারি গ্রামের শঙ্করীতলায় ওই অনুষ্ঠান নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, রাতভর অশালীন নাচ ও জোরে মাইক বাজানো চলছে। সঙ্গে বসছে জুয়োর আড্ডা। খণ্ডঘোষ থানায় বিষয়টি জানান তাঁরা। অভিযোগ পেয়ে রাত পৌনে দশটা নাগাদ ওই গ্রামে গিয়ে উদ্যোক্তাদের অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলে পুলিশ। অভিযোগ তার পরেও তা বন্ধ করা হয়নি। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দায়ের করা অভিযোগে এসআই স্বপন রেজার দাবি, ফিরে আসার পরে অনুষ্ঠান বন্ধ না হওয়ার খবর পেয়ে আবার ওই গ্রামে যান তাঁরা। অভিযোগ, উদ্যোক্তা সুভাষ ধারা, পার্থ বাগ, রামকৃষ্ণ ধারা, পার্থ বাগরা জানান অনুষ্ঠান চলবে। পুলিশকর্মীরা সাউন্ড বক্স বাজেয়াপ্ত করতে গেলে তাঁদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। তাতে জখম হন এএসআই অতীশ বিশ্বাস-সহ চার জন। খণ্ডঘোষ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয় তাঁদের। ইটের ঘায়ে ভাঙে পুলিশের গাড়ির সামনের কাচ।
জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে এলাকা থেকে কিছুটা দূরে পলাশডাঙায় এসে আশ্রয় নেন পুলিশকর্মীরা। ততক্ষণে খণ্ডঘোষ থানার ওসি দীপঙ্কর সরকার পুলিশ বাহিনী নিয়ে চলে আসেন। ফের গ্রামে ঢোকে পুলিশ। অভিযোগকারী এসআই জানিয়েছেন, বেআইনি ভাবে জমায়েত করে ৭০-৮০ জন দাঁড়িয়েছিল। গ্রামে ঢুকতে তাঁরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ইট ছুড়তে থাকে। পুলিশ প্রতিরোধ শুরু করতেই বোম পড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামলে নিয়ে পুলিশ তাড়া করে। ধরা পড়েন অন্যতম উদ্যোক্তা সুভাষ ধারা। ওই এসআই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ২২ জনের নামে অভিযোগ করেন। রাতেই ১০ জনকে ধরা হয়।
ধৃতদের রবিবার বর্ধমান জেলা আদালতে তোলা হলে সুভাষ ধারা, উজ্জ্বল পুইলে ও তাপস রায়ের তিন দিনের পুলিশ হেফাজত হয়। বাকিদেরও তিন দিনের জেল হেফাজত হয়। আদালতের কাছে পুলিশ দাবি করেছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্যাগে ১৭টি বোমা, বোমার মশলা, বোমা তৈরির উপকরণের পাশাপাশি ইটের টুকরো, পাথর, বাঁশ, লাঠি মিলেছে।