এই চালকলেই ঘটেছে বিপত্তি।—নিজস্ব চিত্র
পাঁচিল ভেঙে তিন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় চালকল ‘সিল’ করে দিল পুলিশ। ওই চালকলের অংশীদারদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে মামলাও শুরু করা হয়েছে বলে সোমবার জানায় রায়না থানা।
বর্ধমান-আরামবাগ রুটের বাঁকুড়া মোড় থেকে কয়েকশো মিটার দূরে চকপুরোহিত গ্রামে চালকলটি রয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় গরম চাল বস্তাবন্দি করার সময়ে পাঁচিল ভেঙে পাঁচ জন শ্রমিক গুরুতর জখম হন। তিন জনের মৃত্যু হয়। বাকি দু’জন এখনও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানায়, মৃতেরা হলেন পুরুলিয়ার মানবাজারের অরুণ বাউড়ি (২৩), অনন্ত রায় (২৭) এবং বাঁকুড়ার ইন্দাসের শাসপুরের তপন দাস (৪৫)। মেডিক্যালের বেডে শুয়ে জখম শ্রমিক অভিজিৎ বাগদি ও অক্ষয় বাউড়িরা বলেন, “গরম চাল বস্তা বন্দি করছিলাম। সেই সময়ে পিছন দিকের একটি পাঁচিল ভেঙে পড়ে। চাল ভর্তি বস্তার নীচে আমরা চাপা পড়ে গিয়েছিলাম। কিছু বোঝার আগেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।”
সোমবার এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, গুদামের বাইরে পাঁচিল ভাঙার চিহ্ন। চালকলের ম্যানেজার শেখ লালু বলেন, “ওই গুদামে চারটি খোপ রয়েছে। প্রতিটি খোপে ১০০ থেকে ১৫০ বস্তা চাল থাকে। একটি খোপ ভর্তি করার পরে পাশের খোপে চাল বস্তাবন্দি করা হচ্ছিল। সেই সময়ে অর্ধেক পাঁচিল ও বস্তাভর্তি চাল শ্রমিকদের উপরে পড়ে যায়।” রায়না থানার পুলিশ মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে চাল সরিয়ে জখম শ্রমিকদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। দুর্ঘটনার সময়ে পনেরো জন ওই চালকলে কাজ করছিলেন।
চালকলের এক অংশীদার শেখ মিরাজ হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বলেন, “গুদামের ভিতর ১০ ইঞ্চির পাঁচিল দেওয়া ছিল। সম্ভবত বস্তাভর্তি চালের চাপ নিতে না পেরে পাঁচিলটি ভেঙে পড়েছে। আমরা ভীষণ মর্মাহত।” বেঙ্গল রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র আব্দুল মালেক বলেন, “মৃত ও আহতদের পরিবারগুলিকে সাহায্য করা হবে।”