দুর্গাপুরে মিঠুন চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।
ইস্পাতনগরীতে আসছেন মিঠুন চক্রবর্তী। বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে উদ্দীপনা তুঙ্গে। শশব্যস্ত নেতারা। লাউডস্পিকারে বাজছে মিঠুনের অভিনীত একের পর এক ছবির গান। তার মধ্যেই বিতর্ক। কেন ‘মুঝকো পিনা হ্যায় পিনে দো’ গান বাজানো হল কর্মিসভার আগে? সেই নিয়ে শোরগোল দুর্গাপুরের রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূলের খোঁচা, ‘‘বিজেপির রাজনীতি বুঝি নেশায় চুর হওয়া?’’ পাল্টা মহুয়া মৈত্রের প্রসঙ্গ টেনে জবাব দেন বিজেপি নেতৃত্ব। অন্য দিকে, সভা থেকে মিঠুনের বার্তা, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে বাংলা থেকে উৎখাত করা হবে তৃণমূলকে।
১৯৯৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল মিঠুন অভিনীত হিন্দি ছবি ‘ফুল অউর অঙ্গার।’ সেই ছবির একটি গানের প্রথম কলি ছিল, “মুঝকো পিনা হ্যায় পিনে দো...।” চিত্রায়িত হয়েছিল রাগ-হতাশায় ডুবে থাকা নায়কের (মিঠুন) নেশায় ডুবে যাওয়ার মুহূর্ত। কিন্তু মঙ্গলবার দুর্গাপুরে নেতাজি ভবনে বিজেপির কর্মিসভার আগে এই গান বাজতেই বিতর্কের পারদ চড়তে শুরু করেছে। সভার প্রধান বক্তা ছিলেন অভিনেতা-নেতা মিঠুন। তিনি মঞ্চে ওঠার আগে এই গান বাজানো নিয়ে তৃণমূলের সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “এখন ভোট চাইবার আগেই বোতল চাইছে বিজেপি। দল তো আগেই হোঁচট খাচ্ছিল, এ বার গান শুনে পুরো দল দুলে যাবে।” তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক মঞ্চে মত্ত হওয়ার গান বাজানো মানে মানুষের সমস্যাকে উপহাস করা।” তবে বিজেপির দাবি, ছোট্ট ঘটনাকে বড় করে দেখানোই তৃণমূলের কাজ।
পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ দত্তের মন্তব্য, “গান তো গানই। গান দিয়ে কাউকে নেশা করতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে না। শুধুই বিনোদনের জন্য বাজানো হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র দিল্লিতে কী করেছেন, সেটা সবাই দেখেছে। বাস্তবে অভিনয় উনিই করেন। আর এখানে তৃণমূল রাজনীতি না পেয়ে অভিনয়, গানেও রাজনীতি খুঁজে পাচ্ছে।”
সভায় মিঠুন তুলে ধরেন বাংলার কথা। পাশাপাশি ভিন্রাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের হেনস্থার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, শুধু শুধু রাজনীতি করছে তৃণমূল। তিনি বলেন, ‘‘আমার উটির হোটেলে দেড়শো পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করেন। বম্বেতে (মুম্বই) পাঁচ জন বাঙালি শিল্পী গান গাইছেন। ভেদাভেদের কোনও জায়গাই নেই।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সনাতন হচ্ছে আমাদের উৎস। ছাব্বিশে (২০২৬ সালে) তৃণমূলকে উৎখাত করতেই হবে। আমাদের (বিজেপির) শক্তি কতটা সেটা ভোটের ফলেই টের পাবেন।’’