রাজ্যে স্কুল পরিদর্শক থাকার কথা ২১২৭ জন, অথচ রয়েছেন ১০৫৩ জন। অর্থাৎ মাধ্যমিক স্তরে স্কুল পরিদর্শকের সংখ্যা অর্ধেকে নেমেছে। এই পরিস্থিতিতে ফাঁকি পড়ছে পরিদর্শনের কাজে— এমনটাই দাবি করেছেন পরিদর্শকদের একাংশ। কালনায় ‘পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যালয় পরিদর্শক সমিতি’র দু’দিনের সভায় ওই পদ পূরণের দাবিও তোলা হয়।
রবিবার সভার শেষে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কালীপদ সানা বলেন, ‘‘পরিদর্শকদের বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আর্জি জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ সংগঠনের সদস্যদের দাবি, সাধারণত বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকরা নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে আসছেন কি না কিংবা ছাত্রদের ঠিক মতো পড়াচ্ছেন কি না সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেন পরিদর্শরা। কিন্তু বর্তমানে পরিদর্শন-ব্যবস্থাটাই কার্যত উঠে গিয়েছে।
কেন? মাধ্যমিক শিক্ষা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রথমত, স্কুল পরিদর্শকের সংখ্যা দিনদিন কমছে, ফলে বাড়তি চক্রের দায়িত্বভার নিতে হচ্ছে পরিদর্শকদের। এক-একজন পরিদর্শককে দু’তিনটে চক্রের দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। ওই সব দফতরে শিক্ষকদের পেনশন কিংবা পিএফ তালিকা করতে গিয়েই স্কুল পরিদর্শকদের মাস কেটে যাচ্ছে। এর সঙ্গে রয়েছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের দায়িত্ব। ফলে পরিদর্শকদের আসল উদ্দেশ্যই ব্যহত হচ্ছে। তবে বর্ধমানে জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের উদ্যোগে পরিদর্শকরা ছাড়াও গোটা প্রশাসন যে ভাবে স্কুলে স্কুলে পরিদর্শন করছেন, তাতে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের মধ্যে মানোন্নয়ন ঘটতে শুরু করেছে বলেও দাবি করেন তাঁরা। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বর্ধমানকে ‘মডেল’ করার উদ্যোগ করারও দাবি তোলা হয়। কালীপদবাবু জানান, রাজ্যের বর্তমান-শিক্ষানীতি ও পরিকল্পনা রূপায়নে পরিদর্শকদের ভূমিকা কী হবে তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
রাজ্য শিক্ষা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, সমস্ত জেলায় প্রশাসন নিজের উদ্যোগে স্কুল পরিদর্শন করতেই পারে, তার জন্য নির্দেশিকা জারি করার কোনও প্রয়োজন নেই। আর শিক্ষক নিয়োগ হওয়ার পরে পরিদর্শক নিয়োগ নিয়ে আলোচনা করা হবে।