প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ বাড়ল শাসকদলে

২৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসেবে শেষ পর্যন্ত দলের আইনজীবী সেলের সদস্য দেবব্রত সাঁইকে চূড়ান্ত করেছে তৃণমূল। তাঁর সঙ্গেই আইনজীবী সেলের এর এক সদস্যের নাম নিয়ে টানাপড়েন চলছিল দলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৭ ০৩:০০
Share:

প্রতিবাদ: দুর্গাপুরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে দলের প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ সুভাষপল্লিতে। নিজস্ব চিত্র

দল টিকিট না দেওয়ায় বুধবার পর্যন্ত নির্দল হিসেবে মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন তৃণমূলের ১১ জন নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কয়েকজন বিদায়ী কাউন্সিলরও। বৃহস্পতিবার দলীয় নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে মনোনয়নপত্র তুললেন তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন জেলা সম্পাদক শঙ্করলাল চট্টোপাধ্যায়। এ ছাড়া আরও দুই তৃণমূল কর্মী নির্দল হিসেবে মনোনয়ন তুলেছেন। সব মিলিয়ে তৃণমূলের মোট ১৪ জন নির্দল হিসেবে মনোনয়ন তুলেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

গত বারের ১৪ জন কাউন্সিলরের নাম বাদ পড়েছে এ বার তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা থেকে। বাদ পড়া কাউন্সিলরদের মধ্যে অরবিন্দ নন্দী স্ত্রী সুনীতা নন্দীর নামে, নিমাই গড়াই নিজের ও স্ত্রী চম্পা গড়াইয়ের নামে মনোনয়ন তুলেছেন। মনোনয়ন তুলেছেন বিদায়ী কাউন্সিলর চন্দন সাহা, পল্লবরঞ্জন নাগও। বুধবার আরও ছয় তৃণমূল কর্মী মনোনয়ন তোলেন। তাঁদের মধ্যে এক জন দেওয়াল লিখনও শুরু করে দিয়েছেন।

মঙ্গলবার প্রার্থিতালিকা প্রকাশের সময়ে সাংবাদিক বৈঠকে এসেছিলেন শঙ্করলালবাবু। দলীয় নেতৃত্ব তাঁকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। বৃহস্পতিবার মনোনয়ন তোলার পরে শঙ্করলালবাবু বলেন, ‘‘আমাদের মতো দীর্ঘদিনের কর্মীদের অসম্মান করছেন বর্তমান নেতৃত্ব। এলাকায় দলের কর্মীদের ইচ্ছেকে মর্যাদা দিতে নির্দল হিসেবে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

Advertisement

২৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসেবে শেষ পর্যন্ত দলের আইনজীবী সেলের সদস্য দেবব্রত সাঁইকে চূড়ান্ত করেছে তৃণমূল। তাঁর সঙ্গেই আইনজীবী সেলের এর এক সদস্যের নাম নিয়ে টানাপড়েন চলছিল দলে। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে গত বার পরাজিত প্রার্থী দীপেন মাঝিকেই প্রার্থী করার কথা বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমানের নেতা স্বপন দেবনাথ। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কংগ্রেস কাউন্সিলর শাশ্বতী কর্মকারকে দলে টানার চেষ্টা চলছিল। তা ব্যর্থ হওয়ায় দীপেনবাবুকেই প্রার্থী করা হচ্ছে। তা জানার পরেই দলের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের একাংশ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। প্রতিবাদে তাঁরা সন্ধ্যায় মিছিলও করেন। তৃণমূল নেতৃত্বের যদিও দাবি, যোগ্যতার নিরিখেই দীপেনবাবুকে প্রার্থী করা হয়েছে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, নির্দল হিসেবে মনোনয়ন তোলা অধিকাংশ নেতা-কর্মীই দলে বিদায়ী মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। পরিস্থিতি আঁচ করে এ দিন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও দলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন অপূর্ববাবুর সঙ্গে বৈঠক করেন। তৃণমূলের দুর্গাপুরের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘দুর্গাপুরে সংগঠনে অপূর্ববাবুর প্রভাব অস্বীকার করলে দলেরই ক্ষতি, সে কথা বুঝেছেন উচ্চ নেতৃত্ব।’’ অপূর্ববাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

এ দিনই শহিদ দিবস পালনের ডাক দিয়ে শহরে বড় মিছিল করেন তৃণমূল নেতা নিখিল নায়েক। পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কমলপুর থেকে রঘুনাথপুর হয়ে মিছিল ডিএসপি টাউনশিপের একাংশ পরিক্রমা করে। নিখিলবাবুর অনুগামীদের দাবি, দলের বিভিন্ন বৈঠকে ডাকা হয় না তাঁকে। এলাকার মানুষের নানা সমস্যায় পাশে থাকা থেকে গ্রামীণ ক্রীড়া উৎসবের আয়োজন— নানা কর্মসূচি নেনে নিখিলবাবু। কিন্তু গত বার তিনি হেরে গিয়েছিলেন। এ বার ফের প্রার্থী হওয়ার আশায় ছিলেন তিনি। দল প্রার্থী না করায় নিখিলবাবু অনুগামীদের নিয়ে মিছিল করে নেতৃত্বকে তাঁর গুরুত্বের বিষয়ে বার্তা দিলেন বলে কর্মীদের অনেকের দাবি। নিখিলবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘এলাকার হাজার-হাজার মানুষ আমার সঙ্গে আছেন। তাঁদের নিয়ে শুধু শহিদ দিবস উপলক্ষে মিছিল করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন