সাফাইয়ের অভাবে এমনই হাল বুদবুদের রণডিহায়। নিজস্ব চিত্র।
এলাকায় পর্যটক টানতে ইকো পার্ক তৈরির প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রশাসন। অথচ পিকনিকের মরসুম শেষে বুদবুদের সেই রণডিহাতেই যত্রতত্র পড়ে রয়েছে থার্মোকলের এঁটো থালা, প্লাস্টিকের গ্লাস। বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি ধাক্কা খাচ্ছে পর্যটনও।
ব্রিটিশ আমলে, প্রায় আট দশক আগে দামোদরের উপরে রণডিহায় লকগেট তৈরি হয়। ধীরে ধীরে জায়গাটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। বাসিন্দাদের দাবি, এক সময় এখানে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছের দেখা মিলত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেদিন গিয়েছে। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই এখানে পিকনিক করতে, ঘুরতে আসতেন বহু মানুষ। এখন তার সংখ্যা বেশ কম।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, দামোদর লাগোয়া এলাকায় রয়েছে পিকনিকের জায়গা। অভিযোগ, পিকনিকের মরসুম শেষ হলেও সাফাই হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কখনও নদীর জলে, কখনও বা বাড়িতে উড়ে আসছে এঁটো থালা, গ্লাস।
এই এলাকার দিকে পর্যটকদের নজর ফেরাতে ইকো পার্ক তৈরির পরিকল্পনা নেয় প্রশাসন। সেই মতো গত বছর সেপ্টেম্বরে বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের কাছে ১১ কোটি টাকার প্রকল্প-প্রস্তাব দেওয়া হয়। জেলাশাসক, মহকুমাশাসক-সহ প্রশাসনের কর্তারা এলাকা পরিদর্শনও করেন। সঞ্জয় মণ্ডল, অরূপ দাসদের মতো স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ‘‘এত টাকা খরচ করে এখানে পার্ক বানানোর কথা বলা হচ্ছে। এমন নোংরা, দূষণ থাকলে ইকো পার্ক তৈরি হলেও, এখানে পর্যটরক আসবে না।’’ এলাকার অপরিচ্ছন্নতা নিয়ে ক্ষুব্ধ পর্যটকেরাও। তেমনই এক জন দুর্গাপুরের অর্ঘ্য রায় বলেন, ‘‘নদীর টানে প্রায় দিনই এখানে আসি। কিন্তু এলাকার অবস্থা দেখে আর ভাল লাগে না!’’
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পিকনিকের জায়গায় থার্মোকল, প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ। কিন্তু রণডিহায় প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন। পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা-প্রচারও সেভাবে চালানো হয়নি বলে অভিযোগ। দুর্গাপুরে মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘বিষয়টি জেনেছি। সাফাইয়ের জন্য পঞ্চায়েত সমিতিকে জানানো হবে। ইকো পার্ক তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। অনুমোদন মিললে কাজ শুরু হবে।’’ যদিও গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জর্নাদন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এর আগে এক বার ওই এলাকায় সাফাই-অভিযান চালানো হয়। আবার পরিষ্কার করা হবে।’’