কাজের দাবিতে। সালানপুরের বাথানবাড়ি এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছেন গ্রামীণ এলাকায় ইচ্ছুক প্রত্যেককে একশো দিনের কাজে যুক্ত করতে হবে। কিন্তু পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুরের দেন্দুয়া পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ সে নির্দেশ মানছেন না বলে অভিযোগ গ্রামের বাসিন্দাদের। প্রতিকারের দাবিতে মঙ্গলবার বাথানবাড়ি এলাকায় শতাধিক বাসিন্দা পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান। পরে অবশ্য পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের কাজে যুক্ত করার আশ্বাস দেন। বিক্ষোভ থামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে দেন্দুয়া পঞ্চায়েতের অধীনে বাথানবাড়ি অঞ্চলে একশো দিন কাজের প্রকল্পে একটি রাস্তা তৈরি ও পুকুর খোঁড়ার কাজ চলছিল। হঠাৎ শতাধিক বাসিন্দা সেখানে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কাজও বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা জানান, বেশ কিছু দিন ধরেই এই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন অঞ্চলে একশো দিনের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। বহু লোক কাজ পেয়েছেন। তাঁরাও সকলে এই কাজে যুক্ত হতে চাইছেন। তাঁদের প্রত্যেকের জব-কার্ড আছে। কিন্তু বারবার কাজ চেয়ে আবেদন জানানোর পরেও নানা অছিলায় তাঁদের কাজ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। অবিলম্বে তাঁদের কাজে যুক্ত করার দাবি জানিয়ে এ দিন বিক্ষোভ শুরু করেছেন।
বিক্ষোভকারী বসির আনসারি বলেন, ‘‘আমরা সকলেই দিনমজুর। লকডাউনের জেরে কাজ নেই। পরিবার নিয়ে কষ্টে রয়েছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বারবার একশো দিনের কাজ চাইছি। কিন্তু প্রতিবারই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ কয়েক ঘণ্টা বিক্ষোভ চলার পরে, দেন্দুয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের রঞ্জন দত্ত বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলার পরেও জবকার্ড থাকলে ও ইচ্ছুকদের একশো দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়া হচ্ছে না কেন? উপপ্রধান রঞ্জনবাবুর দাবি, ‘‘কাজ শুরু সময়ে প্রকাশ্যে ঘোষণা করে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করে নাম লেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তখন এই ইচ্ছুক ব্যক্তিরা আসেননি। এখন তাঁরা কাজ চাইছেন।’’ তিনি জানান, পরের সপ্তাহ থেকে তাঁদের যাতে কাজে যুক্ত করা যায়, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
স্থানীয় ও পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পঞ্চায়েতের অধীনে প্রায় ১২০০ জব-কার্ডধারী রয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশকেই এখনও কাজে বহাল করা হয়নি। এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বিডিও (সালানপুর) তপনকুমার সরকার বলেন, ‘‘সামান্য কিছু সমস্যা হয়েছিল। পরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে মেটানো হয়েছে।’’ তপনবাবু জানান, ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতে একশো দিনের কাজ চলছে। ২৫ জন পরিযায়ী শ্রমিককে জব-কার্ড দিয়ে কাজে যুক্ত করা হয়েছে। একশো দিনের কাজ চেয়েও না পাওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে সে প্রসঙ্গে সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফাল্গুনী ঘাসি কর্মকার জানিয়েছেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।