Kazi Nazrul University

আন্দোলন নিয়ে বিজ্ঞপ্তি উপাচার্যের, পাল্টা জবাব

বিজ্ঞপ্তির পরেই আন্দোলনের ঝাঁঝ বেড়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে গিয়ে দেখা গিয়েছে, প্রশাসনিক দফতরের সদর গেট জুড়ে অবস্থান করছেন আন্দোলনকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৩ ০৬:৪০
Share:

বিক্ষোভ বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইনসেটে, বেরিয়ে যাচ্ছেন উপাচার্য। নিজস্ব চিত্র।

কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলা আন্দোলনকে ‘অনৈতিক’ ও ‘অনুমতিহীন’ দাবি করে সোমবার উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী একটি ‘সাধারণ বিজ্ঞপ্তি’ দিয়েছেন। ওই বিজ্ঞপ্তির পাল্টা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, আধিকারিকেরা উপাচার্য, ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে লিখিত জবাব ই-মেল করেছেন বলে দাবি। এমন আবহে মঙ্গলবার উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে বিক্ষোভ আরও বাড়ে। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ছেড়েচলে যান।

Advertisement

গত ১৪ মার্চ থেকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এবং পরে, ‘রেজিস্ট্রারকে’ বরখাস্ত করা হলে, সে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ-অবস্থান কর্মসূচি চালাচ্ছেন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও আধিকারিকেরা। পাশাপাশি, উপাচার্য হিসেবে সাধন চক্রবর্তীর পুনর্নিয়োগের চিঠি দেখানোর দাবি জানানো হয়। এই দাবিগুলি পূরণ না হলে, উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও আন্দোলনকারীরা জানিয়েছিলেন।

এই আবহে, ১৪ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করেছেন উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “অবস্থানের নেতৃত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক সজল ভট্টাচার্য আমার দফতর বন্ধ করে রেখেছেন। তাই আমি কাজে যোগ দিতে পারছি না।”তাঁর সংযোজন, সংবিধানের অধিকার বলে শিক্ষকেরা আন্দোলন করতেই পারেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অবস্থান, বিক্ষোভ ও স্লোগান দেওয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই বিষয়গুলি সোমবারের ‘সাধারণ বিজ্ঞপ্তিতে’-ও উল্লেখ করেছেন উপাচার্য। পাশাপাশি, ওই বিজ্ঞপ্তিতে লেখা, “তাঁদের এই কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হচ্ছে। তা না হলে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দফতরে জানানো হবে।” সে সঙ্গে আন্দোলনটি সজলের ‘নেতৃত্বে’হচ্ছে বলেও দাবি করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

Advertisement

ওই বিজ্ঞপ্তির পরেই আন্দোলনের ঝাঁঝ বেড়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে গিয়ে দেখা গিয়েছে, প্রশাসনিক দফতরের সদর গেট জুড়ে অবস্থান করছেন আন্দোলনকারীরা। এ দিন তাতে যোগ দেন পড়ুয়াদের একাংশ। আন্দোলনকারীদের পাল্টা ই-মেল জবাবে উপাচার্যের বিজ্ঞপ্তিটিকে ‘বেআইনি ফতোয়া’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি, শুধু সজল নন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সবাই’ ‘শান্তিপূর্ণ’ আন্দোলনে যুক্ত বলে দাবি করা হয়েছে। সে সঙ্গে, উপাচার্যের বিজ্ঞপ্তিতে থাকা একটি শব্দের ব্যবহার নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবকুপার নেতা সজলের বক্তব্য, “ওই বিজ্ঞপ্তিটিরকোনও গুরুত্ব নেই। আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ করছি।” বিক্ষোভকারীদের তরফে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক দেবাদিত্য ভট্টাচার্যেরও বক্তব্য, “এটা তুঘলকি ফরমান। উপাচার্য আমাদের বাগ্‌রুদ্ধ করতে চাইছেন। আমরা সংবিধান মেনে কর্মসূচি পালন করছি। আমরা ওই বিজ্ঞপ্তি মানি না।” এ দিনের বিক্ষোভে যোগ দেওয়া পড়ুয়াদের আর্জি, দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে আন্দোলনকারীদের দাবিগুলি বিবেচনা করুন উপাচার্য।

এ দিকে, এ দিন সাড়ে ৪টে নাগাদ উপাচার্য গাড়িতে চড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকেছিলেন। প্রশাসনিক ভবনের সামনে তাঁর গাড়ি দাঁড়ায়। উপাচার্যকে দেখে বিক্ষোভ, স্লোগান বাড়তে থাকে। উপাচার্য বিক্ষোভকারীদের বলেন, “আমি আমার দফতরে বসব। আপনারা আসুন। আলোচনা করা হবে।” সে সময় বিক্ষোভকারীরা জানিয়ে দেন, উপাচার্যের জন্য অবস্থানের জায়গাতেই চেয়ার রাখা আছে। সেখানেই আলোচনা করুন উপাচার্য। উপাচার্য এই প্রস্তাবে রাজি হননি। এর পরেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ছেড়েবেরিয়ে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন