এ ভাবেই বসছে জুয়ার আসর। নিজস্ব চিত্র।
মদ, জুয়ার ঠেক থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্ম। প্রতিবাদ করলে জোটে হুমকি।— দীর্ঘ দিন ধরে এটাই চেনা ছবি কুলটির নিয়ামতপুরে। অরবিন্দ গুপ্ত নামে এক জনের বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনার পরে এলাকার বাসিন্দা থেকে জনপ্রতিনিধি, সকলেই এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের কর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে অরবিন্দবাবুর দাবি।
ঝাড়খণ্ডের কুমারডুবির বাসিন্দা খনিকর্মী অরবিন্দ গুপ্ত নিউরোড এলাকায় বাড়ি করেছেন। সোমবার, গৃহপ্রবেশের আগে রবিবার রাতে বাড়ির রান্নাঘরে আচমকা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পরেই পরিবারটি দাবি করে, বাড়ি তৈরির সময়ে কিছু যুবককে নেশার ঠেক বসাতে বাধা দেওয়াতেই এই ঘটনা ঘটেছে। এলাকার অন্য বাসিন্দারাও পথের ধারে ঠেক চালানোর অভিযোগ করেছেন।
সোমবার রাতেই অরবিন্দবাবুর বাড়িতে যান কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘উদ্দ্যেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কারও বাড়িতে বিস্ফোরণ কুলটিতে কখনও হয়নি। পুলিশ দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করুক।’’ তাঁর দাবি, এলাকায় দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যের অভিযোগ আগেও মিলেছে। পুলিশকে সতর্ক থাকার কথা বলেও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। একই অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বাদল পুইতণ্ডী, কংগ্রেস নেতা চণ্ডী চট্টোপাধ্যায় ও সিপিএমের সাগর মুখোপাধ্যায়ের।
উল্টো দিকে, মঙ্গলবারেও আতঙ্কের রেশ কাটছে না অরবিন্দবাবুর পরিবারের সদস্যদের। অরবিন্দবাবুর কথায়, ‘‘সুন্দর পরিবেশে বাকি জীবনটা কাটাব ভেবেছিলাম। কিন্তু গৃহপ্রবেশের আগের দিনে এমন ঘটনা, স্বপ্নেও ভাবিনি।’’ তিনি জানান, সোমবার সকাল থেকে বেশ কয়েক বার পুলিশ আধিকারিকেরা বাড়িতে এসেছিলেন। গত ৪৮ ঘণ্টায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের কয়েক জন আধিকারিকদের দু’টি দলও এসেছে। বিস্ফোরণের শব্দ কেমন ছিল, কত দূর থেকে তা শোনা যায় ইত্যাদি বিষয় গোয়েন্দা কর্তারা জানতে চান বলে জানান অরবিন্দবাবু।
এলাকাবাসীর ক্ষোভ, ঘটনার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পরেও, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাসের অবশ্য দাবি, ‘‘পুলিশ পদক্ষেপ করেছে। মামলাও রুজু করা হয়েছে।’’ ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রাথমিক ভাবে তিন জনের হদিস মিলেছে বলেও দাবি। এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে।