মণ্ডপে মহাভারতের কথা

মহাভারতের কথাগুলো কেমন— দৃশ্যটার দিকে তাকিয়ে সঙ্গের খুদেকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন মা। কোথাও বা দর্শক ফিরে দেখছেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের উজ্জ্বল অধ্যায়। মহাষষ্ঠীর দিনে এমনই বিভিন্ন টুকরো টুকরো দৃশ্যে জমজমাট দুর্গাপুর ও লাগোয়া এলাকা।

Advertisement

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৪১
Share:

বাঁ দিকে, মার্কনি দক্ষিণপল্লি সর্বজনীনের প্রতিমা। ডান দিকে, ফুলঝোড় সর্বজনীনের মণ্ডপে ভিড়। নিজস্ব চিত্র।

মহাভারতের কথাগুলো কেমন— দৃশ্যটার দিকে তাকিয়ে সঙ্গের খুদেকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন মা। কোথাও বা দর্শক ফিরে দেখছেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের উজ্জ্বল অধ্যায়। মহাষষ্ঠীর দিনে এমনই বিভিন্ন টুকরো টুকরো দৃশ্যে জমজমাট দুর্গাপুর ও লাগোয়া এলাকা।

Advertisement

৫৬ বছরের পুরনো মার্কনি দক্ষিণপল্লি সর্বজনীনের পুজোর এ বারের থিম ‘শ্রীকৃষ্ণের বিশ্বরূপ দর্শন’। মণ্ডপে ঢোকার মুখেই হস্তিনাপুর স্বাগত জানাচ্ছে দর্শকদের। ভিতরে গণেশের মহাভারত রচনা, মহাদেব, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ— সবই রয়েছে। আর রয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে কৃষ্ণার্জুনে কথপোকথন এবং ‘বিশ্বরূপে’র দৃশ্য। মহাভারতের বিভিন্ন খণ্ডচিত্র মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলার দায়িত্বে ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ভুঁইয়া। পুজো কমিটির সভাপতি স্বপন বন্দ্যোপধ্যায় জানান, শিল্পীরা নাগাড়ে তিন মাস ধরে পরিশ্রম করে মণ্ডপ প্রস্তুত করেছেন।

যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বেরিয়ে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে আরও এক বার ঝালিয়ে নিতে দর্শকেরা পাড়ি জমাচ্ছেন ফুলঝোড় সর্বজনীনের মণ্ডপে। ২৫-এ পা দেওয়া এই পুজোর এ বারের থিম ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ।’ ঘোড়়ার উপরে নেতাজি, দু’দিকে সেনাবাহিনী। রয়েছেন অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীরাও। পুজো কমিটির সম্পাদক শ্যামল রায়ের দাবি, মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে নারকেল দড়ি, সুতলি, নাইলনের দড়ি প্রভৃতি। পুজোর ভিড় সামলাতে যথেষ্ট সংখ্যায় স্বেচ্ছাসেবকদেরও রাখা হয়েছে বলে জানান উদ্যোক্তারা।

Advertisement

২৯ বছরের সিটি সেন্টারে চতুরঙ্গ পুজো কমিটির মূল আকর্ষণ ‘পুজোর আড্ডা।’ ইস্কন মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। পুজো কমিটির তরফে পরিমল অগস্তি জানান, প্রতি দিনই থাকছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

শিল্পশহরে হঠাৎ দক্ষিণেশ্বরের কালীমন্দির যেতে ইচ্ছে বলে যেতে হবে ইস্পাতনগরীর হর্ষবর্ধন রোড লাগোয়া মণ্ডপে। হর্ষবর্ধন, রামকৃষ্ণ অ্যাভিনিউ সর্বজনীন দুর্গাপুজো সমিতির এই পুজোর এ বার ৫০তম বর্ষ। পুজো কমিটির সভাপতি তথা স্থানীয় কাউন্সিলর মৃগেন্দ্রনাথ পাল বলেন, ‘‘এই ক’দিন ধর্ম-বর্ণ-জাতির সব আগল ঘুচে যায়।’’ একই রকম সম্প্রীতির সুর বেনাচিতির মসজিদ মহল্লার পুজোতেও। উদ্যোক্তাদের তরফে কুলদীপকুমার সাউ বলেন, ‘‘শারদোৎসব সব অর্থেই মিলন উৎসব।’’ এ ছাড়াও শহর ছাড়িয়ে খানিক দূর গেলে বুদবুদ চেম্বার অফ কমার্সের পুজোটিও নজর কেড়েছে।

এ ভাবেই থিম আর সাবেকিয়ানায় দুর্গাপুরের পুজো জমজমাট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement