Dead Chicken

মুরগি কেটে রান্না, পুরোটাই লাইভ

কাছাড়ি রোডের ওই রেস্তরাঁ মালিক এক্রাম শেখের দাবি, তাঁদের দোকানের চিকেন তন্দুরি ও বিরিয়ানি বেশ বিক্রি ছিল। আচমকা প্রায় তলানিতে ঠেকে চাহিদা। তিনি বলেন, ‘‘আগে দিনে ১৫ কেজি মাংস কিনতাম। এখন মেরেকেটে সাড়ে চার কেজি কিনলেই কুলিয়ে যায়।

Advertisement

সুচন্দ্রা দে

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৮ ০১:৪৫
Share:

নিশ্চিন্ত: আড্ডার ফাঁকে চোখ রান্নায়। নিজস্ব চিত্র

চিকেন পকোড়া বা চিলি চিকেন, অর্ডার করলেই সামনে মুরগি কেটে রান্না করে হাতেগরম ধরিয়ে দিচ্ছে রেস্তরাঁ। ক্রেতারাও নিশ্চিন্তে কামড় দিচ্ছেন মুরগির ঠ্যাঙে।

Advertisement

ভাগাড়-কাণ্ডের পরে মাংসের ক্রেতা ধরে রাখতে এ পথেই হেঁটেছে কাটোয়ার কাছাড়ি রোডের এক হোটেল। তাদের দাবি, চারিদিকে যা অবস্থা তাতে খদ্দের ধরে রাখতে গেলে সব কিছু ‘লাইভ’ দেখানো ছাড়া উপায় নেই।

কলকাতায় ভাগাড় কান্ড সামনে আসার পরে রাজ্য জুড়ে একের পর এক হোটেল-রেস্তরাঁয় অভিযান চলে। দিন পনেরো আগে কাটোয়ারও বেশ কয়েকটি হোটেল ও মাংসের দোকানে আচমকা পরিদর্শন করে প্রচুর পরিমাণ রান্না করা পচা মাছ, মাংস, মশলা, বিরিয়ানির চাল, নোংরা তেল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ জলের বোতল বাজেয়াপ্ত করে পুরসভা। পাঁচ দোকান মালিককে গ্রেফতারও করে পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় বাজেয়াপ্ত হওয়া খাবারের ছবি ছড়িয়ে পড়তেই ভিড় কমতে থাকে রেস্তরাঁয়। সন্ধের আড্ডায় প্লেটে চিকেন পকোড়া, রোলের বদলে চাহিদা বাড়ে ফুচকা, শিঙারার। বিক্রি কমে বিরিয়ানিরও।

Advertisement

কাছাড়ি রোডের ওই রেস্তরাঁ মালিক এক্রাম শেখের দাবি, তাঁদের দোকানের চিকেন তন্দুরি ও বিরিয়ানি বেশ বিক্রি ছিল। আচমকা প্রায় তলানিতে ঠেকে চাহিদা। তিনি বলেন, ‘‘আগে দিনে ১৫ কেজি মাংস কিনতাম। এখন মেরেকেটে সাড়ে চার কেজি কিনলেই কুলিয়ে যায়। তাই কোনও ক্রেতা মাংসের পদ অর্ডার করলেই হেঁসেলে মুরগি কেটে একেবারে রান্না করার ছবি লাইভ দেখিয়ে দিচ্ছি।’’ বিশ্বাস ফিরে এলে বিক্রিও বাড়বে বলে তাঁর দাবি। তবে এক-দু প্লেট মাংসের কিছু অর্ডার করলে হয়তো সবসময় মুরগি কেটে দেখানো সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি। কারণ সেক্ষেত্রে বাকি মাংস বিক্রি হতে সমস্যা হবে।

শহরের অন্য রেস্তরাঁ মালিকেরা অবশ্য এখনই এমনটা করা যাবে না বলেই মনে করছেন। কেউ বলছেন পরিকাঠামো নেই, কেউ বলছেন একেই তো বিক্রি নেই এতে খরচা আরও বাড়বে। ডাকবাংলো রোডের আর এক রেস্তরাঁ মালিক পুলক বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমার রেস্তরাঁয় টিভি রাখার মতো জায়গা নেই। তবে এটা অনস্বীকার্য যে মাংসের পদের বিক্রি তলানিতে ঠেকেছে। আগে ফি দিন ১০০টা পকোড়া ভাজতাম, এখন মেরেকেটে চারটেও বিক্রি হয় না।’’

তবে চোখের সামনে টাটকা মুরগি রান্না হওয়ায় ক্রেতারা খুশিই। কলেজ পড়ুয়া দোলন ঘোষ, শুভাশিস প্রামাণিকেরা বলেন, ‘‘সব টাটকা দেখতে পেলে মাংসে আপত্তি কিসের!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন