পড়ুয়াদের সমস্যা বুঝে পড়ানোয় জোর

রোজ রাতে মদ্যপ বাবা মাকে মারধর করত। তাই দেখে সকালে ক্লাসে এসেও শিক্ষকের মারের ভয়ে সিঁটিয়ে থাকত ছেলেটা। ধীরে ধীরে স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয় সে। এরকম মানসিক টানাপড়েনের মধ্যে দিয়ে যাওয়া পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরাতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ১২:৩০
Share:

রোজ রাতে মদ্যপ বাবা মাকে মারধর করত। তাই দেখে সকালে ক্লাসে এসেও শিক্ষকের মারের ভয়ে সিঁটিয়ে থাকত ছেলেটা। ধীরে ধীরে স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয় সে। এরকম মানসিক টানাপড়েনের মধ্যে দিয়ে যাওয়া পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরাতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযান। প্রতিবন্ধী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য বিশেষ স্কুল নয়, বরং সাধারণ স্কুলেই শিক্ষক কিভাবে মনোবিদের কাজ করতে পারেন, তা নিয়েই ছিল প্রশিক্ষণ।

Advertisement

মঙ্গলবার থেকে কাটোয়ার কাশীরামদাস বিদ্যায়তনে শুরু হওয়া ওই প্রশিক্ষণ চলবে শনিবার পর্যন্ত। তাতে যোগ দিয়েছেন ৯০টি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। আলোচনায় উঠে আসে, সাধারণ স্কুলে প্রতিবন্ধী পড়ুয়াদের জন্য ‘স্পেশাল এডুকেটর’ রয়েছেন। অথচ তা না জানায় অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের বেশির ভাগ সময় স্কুলে পাঠান না। সর্বশিক্ষা মিশনের কো-অর্ডিনেটর তাহের শেখও জানান, প্রতিটি চক্রে দু’জন করে স্পেশাল এডুকেটর থাকলেও তাঁরা নিয়মিত স্কুলে না যাওয়ায় প্রতিবন্ধী পড়ুয়ারা বঞ্চিত হচ্ছে।

শিক্ষকদের পড়ুয়াদের বাড়ির অবস্থা, সমস্যার কথা জেনে বকাঝকা না করে বুঝিয়ে পড়ানোর কথা বলা হয়। অঙ্ক হোক বা কঠিন বাংলা শব্দ বানান ভেঙে পড়ানো, আকারে-ইঙ্গিতে বোঝানো, জীবন্ত মডেল দেখিয়ে বোঝানোর কথাও বলা হয়। এ ছাড়াও দৃষ্টিহীনদের জন্য ব্রেল পদ্ধতিতে পড়ানো, ক্ষীণদৃষ্টিদের জন্য রঙিন ও বড় হরফের বই রাখার কথা বলা হয়। প্রতিবন্ধী পড়ুয়াদের যাতে সিঁড়ি ভাঙতে না হয়, সে দিকে নজর রেখে একতলায় ক্লাসঘরের ব্যবস্থা করার প্রসঙ্গও ওঠে। প্রতি স্কুলের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য কেরিয়ার ক্লাব গঠনের উপরেও জোর দেওয়া হয়। বুলেটিন বোর্ড, কাউন্সেলিং কর্নার তৈরি করে পড়ুয়াদের আগ্রহের বিষয় খোঁজার উপরেও জোর দেওয়া হয়।

Advertisement

আখড়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রদীপ সরকার, শ্রীবাটি উচ্চবিদ্যালয়ের সঞ্জয় সাহারা বলেন, ‘‘না বকে কিভাবে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো যায়, শিখলাম।’’ কাটোয়া ২ ব্লকের সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক মানবেন্দ্র ঘোষও বলেন, ‘‘শিক্ষকদের যত্নশীল হতে হবে, যাতে পড়ুয়ারা নিজেই নিজেদের পছন্দ বেছে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন