জাতীয় সড়কের মোড়ে দ্রুত কাজ শেষের আর্জি পুলিশের

জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ প্রকল্পের জেরে এমনিতেই সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে রাস্তা। তবে সব থেকে খারাপ পরিস্থিতি বিভিন্ন মোড়গুলির। সেগুলিতে উড়ালপুল নির্মাণের কাজ চলছে। রাস্তার এক দিক সম্পূর্ণ বন্ধ করে চলছে কাজ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৫ ০১:৪৩
Share:

ভেঙে ফেলা হয়েছে ডিভাইডার। সেখান দিয়েই চলছে যাতায়াত। মুচিপাড়ায় ২ নম্বর জাতীয় সড়কে তোলা নিজস্ব চিত্র।

জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ প্রকল্পের জেরে এমনিতেই সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে রাস্তা। তবে সব থেকে খারাপ পরিস্থিতি বিভিন্ন মোড়গুলির। সেগুলিতে উড়ালপুল নির্মাণের কাজ চলছে। রাস্তার এক দিক সম্পূর্ণ বন্ধ করে চলছে কাজ। তাতে রীতিমতো অসুবিধা হচ্ছে চলাচলে। রবিবার ঘটে গিয়েছে দুর্ঘটনাও। মোড়গুলিতে যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করার জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে আর্জি জানাচ্ছে পুলিশ।

Advertisement

রবিবার সকালে মুচিপাড়া মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় একটি ছাই বোঝাই ট্যাঙ্কার। চাপা পড়ে মারা যান তিন জন। জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও দু’জন। পুলিশ জানিয়েছে, অত্যন্ত দ্রুত গতিতে বাঁকে ঘোরার সময়ে ট্যাঙ্কারটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলায় মুচিপাড়া মোড়ে চার লেনের জাতীয় সড়ক এখন কার্যত দুই লেনে দাঁড়িয়েছে। উড়ালপুল নির্মাণের কাজ চলছে দুর্গাপুরের গোপালমাঠ, ভিড়িঙ্গি, গাঁধী মোড়েও। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই সব মোড়েও ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগে থাকছে। যে কোনও দিন মুচিপাড়ার মতো বড় ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা তাঁদের।

গাঁধীমোড়ে জাতীয় সডকের এক দিক থেকে বেরিয়ে গিয়েছে শিল্পাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা হ্যানিম্যান সরণি। অন্য দিকে দুর্গাপুর ইস্পাতনগরীতে ঢোকার অন্যতম প্রধান সড়ক। সোমবার সেখানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, চার লেনের রাস্তার অর্ধেকেরও বেশি অংশ জুড়ে তৈরি হচ্ছে উড়ালপুল। ইস্পাতনগরী থেকে সরাসরি জাতীয় সড়কে যেতে কোনও অসুবিধা নেই। সংকীর্ণ হলেও জাতীয় সড়ক ধরে তুলনায় কম গতিতে যাতায়াত করছে যানবাহন। কিন্তু জাতীয় সড়ক থেকে হ্যানিম্যান সরণি যেতে হলে অথবা ইস্পাতনগরী থেকে জাতীয় সড়ক পেরিয়ে হ্যানিম্যান সরণি যেতে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে চালকদের। পুরনো সিগন্যাল ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে ফেলতে হয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় ইস্পাতনগরী থেকে হ্যানিম্যান সরণিতে যেতে হলে কয়েকশো মিটার জাতীয় সড়ক ধরে এগোনোর পরে ওই রাস্তায় ঢোকার উপায় মিলছে। তা ছাড়া হ্যানিম্যান সরণিতে ঢোকার এবং সেখান থেকে জাতীয় সড়কের ফেরার রাস্তার মাঝে দূরত্ব কয়েকশো মিটার। ফলে সিগন্যাল ঠিক মতো দেখতে না পেরে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না চালকেরা। এর ফলে যে কোনও সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকর্মীরা জানিয়েছেন, সিগন্যাল বোঝাতে হিমসিম দশা তাঁদের। তার পরেও অনেকে বুঝতে না পেরে সিগন্যাল ভাঙছেন।

Advertisement

একই পরিস্থিতি ভিড়িঙ্গি মোড়েও। সংকীর্ণ হয়ে পড়া জাতীয় সড়ক থেকে বেনাচিতি বাজারের রাস্তা বেরিয়ে গিয়েছে। মোড় থেকেই বাজার শুরু। স্টেশন থেকে বেনাচিতি রুটের মিনিবাস-সহ নানা যানবাহন, ও দিকে উখড়া, রানিগঞ্জ, অন্ডাল থেকে আসা মিনিবাস— এই মোড় থেকে ঢোকে বেনাচিতি বাজারের দিকে। সিগন্যালে লাল আলো জ্বললে বেনাচিতিগামী মিনিবাস, মোটরবাইক-সহ সব যানবাহন বিপজ্জনক ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয় জাতীয় সড়কে। পিছন থেকে বড় ট্রাক, লরি বা ডাম্পার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারার আশঙ্কা রয়েছে। গোপালমাঠ মোড়েও একই অবস্থা।

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট গতিতেই এগোচ্ছে। দুর্ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন মোড়ের আগে রাস্তা ভাগের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে বোর্ড লাগানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ শেষ হতে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু মোড়গুলির কাজ যাতে দ্রুত শেষ করে ফেলা হয় সেই আর্জি জানানো হচ্ছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে। পাশাপাশি, দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রাফিক ব্যবস্থা আরও কড়াকড়ি করে মোড়গুলিতে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এডিসিপি (পূর্ব) অমিতাভ মাইতি জানিয়েছেন, দুর্গাপুর শহরের মাঝ বরাবর চলে গিয়েছে জাতীয় সড়ক। তাই শুধু দূরপাল্লার নয়, শহরের মানুষজনও নিয়মিত জাতীয় সড়ক ব্যবহার করতে বাধ্য হন। তাই গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে দ্রুত কাজ শেষ করা জরুরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন