পথ-নিরাপত্তার পাঠ। নিজস্ব চিত্র
অন্য দিনের তুলনায় বুধবার শহরের ফুলের দোকানগুলি ভিড় দেখা যায় সকাল থেকেই। যুবক-যুবতীদের পাশাপাশি সেই ভিড়ে দেখা গিয়েছে পুলিশকেও।
হাতে গোলাপ তুলে নিল আসানসোল দক্ষিণ থানা ও ট্র্যাফিক বিভাগের পুলিশ। তবে ভ্যালেন্টাইনস-ডে পালনের জন্য নয়। রাস্তায় যাঁরা বিনা হেলমেট মোটরবাইক নিয়ে বের হয়েছেন, তাঁদের সচেতন করতে। অনেককে নতুন হেলমেট পরিয়েও পুলিশের অনুরোধ, রাস্তায় নামলে সঙ্গে রাখুন। ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ কর্মসূচি’ পালন করতে বুধবার এই কাজই করল পুলিশ। আসানসোলের হটন রোড মোড়ে স্কুল ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে এই সচেতনতা কর্মসূচি পালন করা হয়।
আসানসোলে শহরের জিটি রোডে অধিকাংশ বাইকআরোহীর মাথায় হেলমেট ছিল না। জরিমানা আদায় কিংবা তাঁদের সতর্ক করেও কোনও কাজ হয়নি। তাই এ দিন তাঁদের আরও একবার বিশেষ দিনটির মাধ্যমে সচেতন করতে উদ্যোগী হয় পুলিশ। রাস্তার মোড়ে যে সকল বাইকআরোহী বিনা হেলমেট ছিলেন, তাঁদের ডেকে নিয়ে পুলিশ হাতে গোলাপ ফুল তুলে দেয়। পুলিশ কর্তারা অনুরোধ করেন, আজকের দিনটা মনে রাখুন। দয়া করে হেলমেট ব্যবহার করুন। কয়েকজন আরোহীকে হেলমেটও দেয় পুলিশ।
এসিপি (সেন্ট্রাল) অজয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুধু জরিমানা করলেই হবে না। মানুষকে সচেতন করতে হবে। পরিবার ও নিজের নিরাপত্তার জন্য এই হেলমেট ব্যবহার করতে অনুরোধ করেছি।’’ বিনা হেলমেটে বাইকে করে যাচ্ছিলেন মনু সিংহ, অঙ্কিতা অগ্রবালরা। এমন দিনে পুলিশের কাছ থেকে গোলাপ পেয়ে তাঁদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এর পর থেকে মাথায় হেলমেট পরব কথা দিয়েছি।’’
শহরের এক দিকে যখন পুলিশের এমন ভূমিকা দেখা গিয়েছে, তেমনি দিন যত গড়িয়েছে পার্ক থেকে শুরু করে শপিং মল, রেস্তোরাঁয় ভিড় বেড়েছে যুবক-যুবতী থেকে সব বয়সের মানুষের। এ দিন, আসানসোলের চিত্রা মোড় এলাকায় স্কুল, কলেজের পড়ুয়াদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখানকার মলের ভিতরে একসঙ্গে বিভিন্ন বিপণীতে ঘুরে বেড়ান তাঁরা। তিলধারনের যায়গা ছিল না। শহরের শতাব্দী পার্ক বন্ধ। কিন্তু দূরে হলেও গুঞ্জন পার্ক বা লামেয়া পার্ক বেশ ভিড় ছিল। মহকুমাশাসকের আবাসনের সামনেও যুবগলদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো।
এক কথায় উৎসবের মেজাজ ছিল গোটা শহরে। পূজা, স্বপন, অশোক, ববিতা বলছেন, ‘‘সকল থেকেই পাঞ্জাবি, পায়জামা পরে সেজেগুজে তৈরি হয়েছি। দিনটা আনন্দে একসঙ্গে কাটাব বলে।’’ এ সবের মধ্যে কারও আবার পুরনো স্মৃতি ফিরে এসেছে। পুলিশ কমিশনারেটে চাকুরি করা এক কর্মীর কথায়, ‘‘বৈশাখীর সঙ্গে দেখা দু’বছর পরে। এ দিন খাওয়া-দাওয়া করলাম একসঙ্গে।’’ কারও আবার এ বার প্রথম প্রেম নিবেদন করল। চিত্রা মোড়ের শপিং মালের ফোয়ারার পাশে বসে এমনই এক স্কুল পড়ুয়া বলল, ‘‘এ বার প্রথম ভ্যালেন্টাইন-ডে পালন। অঙ্গীকার করছি দু’জনে সঙ্গেই থাকব।’’