ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র
রোগী মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ উঠল বুদবুদের মানকর গ্রামীণ হাসপাতালে। পাল্টা অভিযোগ, রোগীর পরিজনেরা হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছেন এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্সকে হেনস্থা করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার জ্বর নিয়ে ভর্তি হন আউশগ্রাম ২-র শোলাগড় গ্রামের বাসিন্দা হাফিজুল মণ্ডল (২২)। তাঁর পরিজনদের দাবি, চিকিৎসায় অনেকটাই সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন হাফিজুল। এর পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফের অসুস্থ বোধ করেন ওই যুবক। হাসপাতাল সূত্রে দাবি, হাফিজুল জানিয়েছিলেন, ‘খুব কষ্ট হচ্ছে, ঘুম আসছে না।’ সেইমতো কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে একটি ইঞ্জেকশন দেন। কিছু সময় পরেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক পরেশচন্দ্র সরকার জানান, যুবকের সঙ্গে এক আত্মীয় ছিলেন। তাঁকে জানানো হয়, হাফিজুল মারা গিয়েছেন।
অভিযোগ, এর খানিক বাদেই রাত সাড়ে ন’টা-দশটা নাগাদ শোলাগড় গ্রামের ৫০-৬০ জন হাসপাতালে চলে আসেন। তাঁরা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। চিকিৎসক পরেশবাবু ও উপস্থিত নার্সদের হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। এ ছাড়া হাসপাতালের টেবিলের কাচ, ওষুধও ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই সময়ে কর্তব্যরত দু’জন নার্স সোমা দাস ও সমাপ্তি সাধুরা জানান, ওই রাতে কয়েক জন হাসপাতালের ওয়ার্ডের মধ্যে ঢুকে চিৎকার শুরু করেন। টেবিল উল্টে দেওয়া হয়। তাঁদের আরও অভিযোগ, ‘‘আমাদের লক্ষ করে গালিগালাজও করা হয়। প্রাণ বাঁচাতে একটি ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়ি আমরা।’’ পুলিশে খবর দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে দু’চার জন পুলিশ এলেও, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পৌঁছয়। শেষমেশ ভোর তিনটে নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনার পরেই নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ করেছেন হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীরা। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। রাতে হাসপাতালে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।’’