সরকারি নিলামে বালিঘাটের ইজারাদার তাঁরা। কিন্তু স্থানীয় লোকজনদের বাধায় ঘাটের দখলই নিতে পারেননি, মঙ্গলকোটের তিনটি বালিঘাট নিয়ে এমনই অভিযোগ জমা পড়েছে জেলা প্রশাসনের কাছে।
আবার সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে এক মৌজার চালান কেটে অন্য মৌজা থেকে বালি তোলার ঘটনারও নজির রয়েছে প্রশাসনের কাছে। এই দুইয়ের মাঝে পড়ে সরকারি রাজস্বে টান পড়ার সম্ভাবনা দেখছেন কর্তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব।
জেলাশাসকের কথায়, “জেলার ৫০ শতাংশ বালি খাদানের নিলাম করে ৭১ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। বাকি খাদান থেকে আরও বেশি রাজস্ব আদায় করার লক্ষ্যে বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে দেড়শোরও বেশি বালিঘাট রয়েছে। অনলাইন নিলামে বেশ কিছু বালিঘাটের দখল পেয়েছেন ইজারাদারেরা। কিন্তু স্থানীয় দুষ্কৃতি বা রাজনৈতিক দলগুলির ‘তোলাবাজি’তে কাজ করতে পারছেন না বলে তাঁদের অভিযোগ। বারবার মৌখিক ভাবে বিষয়টি প্রশাসনে জানিয়েছেন তাঁরা। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, পুলিশ গিয়ে প্রকৃত ইজারাদারকে ‘দখল’ দিয়ে আসছে। কিন্তু কিছুদিন পরেই বালিঘাটে বোমাবাজি হচ্ছে। মঙ্গলকোটে বোমাবাজিতে এক জন মারাও গিয়েছেন। বারবার আইনশৃঙ্খলায় সমস্যা দেখা দেওয়ায় পুলিশও সমস্যায় পড়ছে। এ সব কারণে শেষ অনলাইন নিলামে ইজারাদারদের যোগদান এক ধাক্কায় অনেকটা কমে যায় বলেও জেলা প্রশাসনের দাবি। প্রতিযোগিতা কম হওয়ায় নিলাম থেকে রাজস্ব আদায়ও কম হয়েছে। জেলাশাসকের কথায়, “এ বছর অনলাইন নিলামে বেশি ইজারাদার অংশ নিন, সেটাই চাইছি।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বর্ষা আগে সম্ভবত ১৫ জুন থেকে বালি তোলা নিষিদ্ধ করতে চলেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। নদীবাঁধগুলিতেও ১৪৪ ধারা জারি করতে চাইছেন কর্তারা। এক মৌজার চালান দিয়ে অন্য মৌজার বালি তুলে ‘পাচার’ করার ঘটনা নিয়ে বেশ কয়েকটি এফআইআর হয়েছে বলেও প্রশাসন সূত্রের খবর। বেআইনি ভাবে বালি তোলায় এক দিকে গর্ত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে নদীতে। যন্ত্রের সাহায্যে বালি তোলায় সেতুও দুর্বল হচ্ছে। জেলাশাসক বলেন, “নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে বালিঘাট চালানো হলে ইজারাদারদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিতে প্রশাসন বাধ্য হবে। সে কথা ইজারাদারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”