ডাইনি অপবাদের অভিযোগ

বিজ্ঞান মঞ্চের দল গোপালপুরে

২২ মে মনেরকোঁদায় বছর চল্লিশের এক মহিলাকে ডাইনি অপবাদে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল প্রতিবেশী মহিলাদের বিরুদ্ধে। ভাঙচুর করা হয় ওই মহিলার বাড়ি ও দোকান। তাঁকে বাঁচাতে এসে মার খান তাঁর দুই ছেলেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁকসা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৭ ০০:৫৫
Share:

গ্রামে প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র

ডাইনি অপবাদে আদিবাসী এক মহিলাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল কাঁকসার গোপালপুর পঞ্চায়েতের মনেরকোঁদা গ্রামে। পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ডাইনি প্রথা যে আদতে কুসংস্কার ছাড়া আর কিছু নয়, বুধবার তা বোঝাতে ওই গ্রামে গেলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কাঁকসা বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা।

Advertisement

২২ মে মনেরকোঁদায় বছর চল্লিশের এক মহিলাকে ডাইনি অপবাদে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল প্রতিবেশী মহিলাদের বিরুদ্ধে। ভাঙচুর করা হয় ওই মহিলার বাড়ি ও দোকান। তাঁকে বাঁচাতে এসে মার খান তাঁর দুই ছেলেও। খবর পেয়ে গোপালপুর পঞ্চায়েতের প্রধান অর্পিতা ঢালি সেখানে গেলে গ্রামবাসীদের একাংশ তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ ওঠে। পরে পুলিশ গিয়ে ওই মহিলা ও তাঁর ছেলেদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরের দিন প্রশাসনের কর্তারা গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ওই মহিলাকে বাড়িতে দিয়ে আসেন।

এই ঘটনার পরে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কাঁকসা কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা ওই গ্রামে গিয়ে বাসিন্দা ও আক্রান্ত পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন ঠিক করেন। সেই মতো বুধবার তাঁরা ওই গ্রামে যান। কাঁকসা কেন্দ্রের সম্পাদক অরুণকিরণ চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁরা জানতে পেরেছিলেন ঝাড়ফুঁকের জন্য গ্রামে কয়েকজন ওঝাকে ডাকা হয়েছিল। গ্রামবাসীরা অবশ্য তাঁদের জানান, পুজোর জন্য ওঝা ডাকা হয়েছিল। তবে বাসিন্দাদের একাংশ জানান, ওই মহিলাকে না ডাকা হলেও, তাঁর জন্যই ওঝা ডাকা হয়। এ দিন বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা গ্রামবাসীদের জানান, ডাইনি প্রথা আদতে কুসংস্কার। সম্পত্তি দখল বা নানা অসাধু কাজের উদ্দেশ্যেই যে কোনও মহিলাকে ডাইনি অপবাদ দেওয়া হয়, তা-ও জানান তাঁরা। এ ক্ষেত্রে সে রকম কিছু ছিল কি না, তা খোঁজ করে দেখছেন তাঁরা।

Advertisement

কুসংস্কার মেটাতে এ দিন প্রতিনিধিরা গ্রামের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেন অভিভাবকদের কাছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যপরীক্ষাও যে জরুরি, সে কথা মনে করিয়ে দেন তাঁরা। রবিবার গ্রামে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যশিবির করা হবে বলেও জানান। গ্রামের মোড়ল লখিরাম টুডু এ দিন বলেন, আমরা চাই সকলে শান্তিতে থাকুক। কুসংস্কার যাতে মানুষের মনে না আসে, সেদিকেও নজর রাখা হবে। প্রতিনিধিরা কথা বলেন আক্রান্ত পরিবারটির সঙ্গেও। গ্রামে সকলের সঙ্গে মেলামেশার কথা বলা হয় তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন