জাতীয় সড়কে ফের দু্র্ঘটনা। এ বার বলি হলেন দুই ভাই।
শুক্রবার সকালে বর্ধমানের তেলিপুকুর এলাকা দিয়ে মোটরভ্যান নিয়ে গলসি যাওয়ার পথে ট্রাকের ধাক্কায় জখম হন তাঁরা। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে বিকেলের দিকে সেখানেই মারা যান রাধাকমল নায়েক (৬০) ও কৃষ্ণকমল নায়েক (৫৮)।
এই ঘটনার পরে ফের জাতীয় সড়কের উপর বেআইনি গাড়ি যাতায়াত নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বারবার নিষেধ জারি করার পরেও কী ভাবে মোটরভ্যান, টোটো, সাইকেল অনায়াসে চলছে ওই রাস্তা দিয়ে তা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের যদিও দাবি, এ নিয়ে বারবার বৈঠক হয়েছে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর ওই ধরণের গাড়ি চলাচল করলে দুর্ঘটনার প্রকোপ বাড়তেই থাকবেই।
অভিযোগ উঠেছে বেপরোয়া ট্রাক চলাচল নিয়েও। জিটি রোড হোক বা জাতীয় সড়ক, বারবারই দুর্ঘটনা ঘটছে পূর্ব বর্ধমানে। বৃহস্পতিবারই মেমারিতে পুরনো জিটি রোডে গাড়ির ধাক্কায় মারা যান মা-ছেলে। বাস ধরার জন্য প্রতীক্ষালয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরা। জানা যায়, গাড়িটি আচমকা রাস্তার ধারের বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা মেরে ওই প্রতীক্ষালয়ে ঢুকে পড়ে। সেখান থেকে ছেঁচড়ে নিয়ে যায় ওই মা-ছেলেকে। এ দিনের ঘটনাতেও ট্রাকটির গতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নাহলে পিছনে থেকে ধাক্কা খেয়ে রাস্তার উপর ছিটকে যেতেন না দু’জন।
স্থানীয় মানুষজনের দাবি, বর্ধমানের রথতলায় একই পরিবারের সাত জনের মৃত্যুর পর পুলিশ যান নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় হয়েছিল। কয়েক দিন নজর আলগা হতেই ফের ওই সব গাড়ির দাপট শুরু হয়েছে। জেলা পুলিশ সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর নিয়মিত ভাবেই নজরদারি চলে। তবে এ ক্ষেত্রে মোটরভ্যানটি জাতীয় সড়ক ধরে যাচ্ছিল কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের বাড়ি রায়না থানার দেরিয়াপুর গ্রামে। তাঁরা এ দিন গ্রাম থেকে তিন চাকার মোটরভ্যান ভাড়া করেই চাষের উপকরণ কিনতে গলসির দিকে যাচ্ছিলেন। দামোদরের উপর সদরঘাট সেতু পার হয়ে মোটরভ্যানটি জাতীয় সড়কের আন্ডারপাসে ওঠে। সেই সময় ওই ভ্যানটির পিছনে ধাক্কা মারে দ্রুত গতিতে আসা ট্রাক। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর ছিটকে পড়েন দুই ভাই। মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে তাঁদের। দু’জনেই হাসপাতালে পাঠান স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে ভ্যান চালক আহত হননি।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃতের আত্মীয় ধনেশ নায়েক জানান, ওই দুই ভাই চাষের কাজের জন্য খোল ও অন্যান্য উপকরণ কিনতে বেড়িয়ে ছিলেন। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ওই দুই ভায়ের দেহ ময়নাতদন্ত হয়েছে।