মহিলা কর্মীর মাথায় অস্ত্র ধরে ছিনতাই

দিপালী মাজি নামে ওই কর্মী পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই দু’জন নার্সিংহোমে আচমকা ঢুকে পড়েন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে হিন্দিতে কথা বলছিলেন। দু’জনেরই মুখ ঢাকা ছিল না। নার্সিংহোমে ঢুকেই দু’জনে দিপালীদেবীর কাছে টাকা চান বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কুলটি শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০৬
Share:

ঘটনার পরে তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

রাত ১০টা। নার্সিংহোমের রিসেপশনে বসে রয়েছেন এক মহিলা কর্মী। সেখানে অন্য লোকজন প্রায় নেই বললেই চলে। আচমকা দু’জন যুবক ঢুকে পড়েন। এক জনের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র, জানান ওই কর্মী। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই মহিলাকর্মীর মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে তাঁর থেকে মোবাইল, ব্যাগের টাকা এবং দু’কানের সোনার দুল নিয়ে চম্পট দেন ওই দুই যুবক। কুলটি থানার নিয়ামতপুর লাগোয়া চিত্তরঞ্জন রোডের ঘটনা।

Advertisement

দিপালী মাজি নামে ওই কর্মী পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই দু’জন নার্সিংহোমে আচমকা ঢুকে পড়েন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে হিন্দিতে কথা বলছিলেন। দু’জনেরই মুখ ঢাকা ছিল না। নার্সিংহোমে ঢুকেই দু’জনে দিপালীদেবীর কাছে টাকা চান বলে অভিযোগ। তা দিতে অস্বীকার করায় গালে চড় মারা হয় বলে অভিযোগ দিপালীদেবীর। অভিযোগ, এর পরেই এক জন দিপালীদেবীর মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকান। কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর মোবাইল ফোন, ব্যাগে থাকা টাকা। শুধু তাই নয়, দু’কানে হ্যাঁচকা টান মেরে দিপালীদেবীর সোনার দুল ছিঁড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর ফলে তাঁর কান থেকে রক্ত বার হয়।

মাত্র মিনিট পনেরোর মধ্যে গোটা ঘটনা ঘটে। তার পরেই ওই দু’জন চম্পট দেন। এই ঘটনার পরে এলাকা ও নার্সিংহোমের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নার্সিংহোমের কর্মীরা। মঙ্গলবারও দিপালীদেবী বলেন, ‘‘এখন ঘরের বাইরে বার হতেই ভয় লাগছে।’’

Advertisement

ঘটনার সময়ে আশপাশের অন্য দোকানগুলিও বন্ধ ছিল বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে সোমবার রাতে নার্সিংহোমে যায় নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে যান আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ গোটা এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে। সীমানা এলাকায় কড়া নজরদারি চলছে। দুষ্কৃতীরা
ধরা পড়বে।’’

তবে, প্রায় কুড়ি বছরের পুরনো ওই নার্সিংহোমে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, নার্সিংহোমের কেন ক্যামেরা বসানো হয়নি, সে বিষয়ে মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। দ্রুত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন কর্মীরাও। নার্সিংহোমের মালিক ও চিকিৎসক সুন্দরলাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘এত দিন সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়নি। থাকলে ভাল হত। এ বার অবশ্যই তা বসিয়ে নেব।’’ ঘটনার সময়ে নার্সিংহোমের গেটে কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছিল না বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ আরও জানায়, সমস্ত নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ও এলাকার অন্য ব্যবসায়ীদের ডেকে পাঠিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

যে এলাকার নার্সিংহোমে ঘটনাটি ঘটেছে, সেখান থেকে পাঁচ থেকে দশ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে সীমানা। ফলে এমন একটি এলাকায় পুলিশি সক্রিয়তা আরও জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। নিয়ামতপুর চেম্বার অফ কমার্সের তরফে এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন