শিবপুরে অজয়ের ঘাটে অভিযানে কর্তারা। ছবি- নিজস্ব চিত্র।
বেআইনি বালি খাদান বন্ধ করতে হবে, সেই সঙ্গে পরিবেশ মন্ত্রকের নিয়ম মেনে বালি তোলা হচ্ছে কি না সেটাও দেখতে হবে— নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আর তার পরেই অভিযান শুরু হয়েছে নানা এলাকায়। মাঠে নামল দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনও। কাঁকসায় অভিযান চালিয়ে মোট ৪৬টি বালির লরি আটক ও প্রায় ২১ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে, জানালেন মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা।
কাঁকসায় বেআইনি বালির কারবার ঘিরে বারবার গোলমাল হয়েছে। এমনকী, বেআইনি বালি কারবারের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোয় আবাসনে গিয়ে বিডিও-কে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। কাঁকসায় অজয়, দামোদর ও কুনুর, তিন নদ-নদী থেকেই রমরমিয়ে বালি তোলা হয় বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
কাঁকসার শিবপুর, সাতকাহানিয়া-সহ বেশ কিছু এলাকায় অজয় থেকে অবাধে বালি তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তুলনায় ছোট কুনুরও ছাড় পাচ্ছে না। এই কুনুর থেকে বালি তুলে নিয়ে যাওয়ার সময়ে একটি ট্রাক্টর আটকে জরিমানা করার জন্যই বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাসকে বাড়ি গিয়ে মাফিয়ারা হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, অবৈধ বালি কারবারে শাসক দলের স্থানীয় কিছু নেতার ইন্ধন রয়েছে। যদিও তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেআইনি কারবারে দলের কেউ যুক্ত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল থেকেই অজয়ের শিবপুর ও অজয় ঘাটে রমরমিয়ে বালি তোলা চলছিল। ছুটির দিন থাকায় অভিযান হবে না বলে আশা করেছিল কারবারিরা। কিন্তু মহকুমাশাসকের নেতৃত্বে মাঠে গাড়ির চাকার দাগ ধরে শিবপুরে নদীর ঘাটে পৌঁছন প্রশাসনের লোকজন। প্রথম দফায় ১২টি বালির ট্রাক আটক করা হয়। শেষ পর্যন্ত মোট ৪৬টি ট্রাক আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন মহকুমাশাসক। জরিমানা আদায় হয় ২০ লক্ষ ৭ হাজার টাকা। থানায় ওভারলোডিং ও বেআইনি বালি তোলার অভিযোগ করা হয় পরিবহণ দফতরের তরফে। আগাম বুঝতে পেরে বেশ কিছু ট্রাকের চালক ও কর্মী পালিয়ে যায়। জেলা পুলিশের কাছে বালি ঘাটে পুলিশ ক্যাম্প বসানোর আর্জি জানানো হয়েছে বলে জানান মহকুমাশাসক।