দূষণ-চিত্র: ধুলো, ধোঁয়ায় ঢেকেছে দুর্গাপুরের রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুক এলাকা। ছবি: বিকাশ মশান
কৌশলগত বিলগ্নিকরণ প্রক্রিয়া কার্যকরের জন্য পরামর্শদাতা সংস্থা নির্দিষ্ট করতে টেন্ডার ডাকা হয়েছিল দু’দফায়। কিন্তু তাতে সাড়া মেলেনি। তাই স্বস্তির হাওয়া দুর্গাপুরের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টে (এএসপি) শ্রমিক-কর্মীদের মধ্যে। প্রকাশ্যে সে কথা স্বীকার না করলেও ওই খবর পাওয়ার পরেই ভাটার টান আন্দোলন কর্মসূচিতে।
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির দাবি, দেশের বিভিন্ন ইস্পাত কারখানার আধুনিকীকরণের জন্য সেল ৭২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও এএসপি-র জন্য কোনও টাকা দেয়নি। এএসপি-র কর্মী সংখ্যা এক সময়ে ছিল ৭৪০০। এখন দাঁড়িয়েছে ৯৫৪। অথচ, সেলের বহু সংস্থার তুলনায় এএসপি-র লোকসান অনেক কম। ইস্পাত মন্ত্রকের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করলেই তা সামাল দেওয়া সম্ভব বলে দাবি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির নেতাদের। তাঁদের মতে, এই সংস্থাকে কোনও ভাবেই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া উচিত নয়।
সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে বিলগ্নিকরণ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণ, আইনি সহায়তা ও লেনদেন সম্পর্কিত পরামর্শদাতা নির্দিষ্ট করতে টেন্ডার ডেকেছিল সেল। ৩ এপ্রিল ছিল শেষ দিন। কিন্তু কোনও সংস্থা টেন্ডারে যোগ দেয়নি। এর পরে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত আবেদনের দিন বাড়ানো হয়। শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, তার পরেও সদর্থক সাড়া মেলেনি। শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলেই কোনও সংস্থা এগিয়ে আসার ঝুঁকি নেয়নি বলে তাদের দাবি।
সিটু অনুমোদিত ‘হিন্দুস্তান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’-এর নেতা সৌরভ দত্তের বক্তব্য, ‘‘এএসপি এবং সেলের বাকি দু’টি কারখানার কৌশলগত বিলগ্নিকরণের বিরুদ্ধে শ্রমিকেরা-সহ সংশ্লিষ্ট সকলে একজোট হয়ে লড়াই করছেন। কোনও পরামর্শদাতা সংস্থা এগিয়ে না আসায় শ্রমিকেরা খুশি।’’ আইএনটিইউসি-র জেলা সভাপতি বিকাশ ঘটক বলেন, ‘‘শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ এবং কোনও পরামর্শদাতা সংস্থা এগিয়ে না আসার পরেও কেন্দ্র সিদ্ধান্ত না পাল্টালে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।’’
এএসপি কারখানার কৌশলগত বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অক্টোবর থেকে টানা আন্দোলন হয়েছে। ১১ এপ্রিল বিএমএস বাদে বাকি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি একযোগে ধর্মঘটে সামিল হয়। কিন্তু তার পরে এক সপ্তাহে নতুন করে আর কোনও কর্মসূচি নিতে দেখা যায়নি সংগঠনগুলিকে। শ্রমিকদের একাংশের দাবি, পরামর্শদাতা সংস্থার টেন্ডারে কেউ এগিয়ে না আসায় আপাতত সংগঠনগুলি স্বস্তিতে। তাই আন্দোলনের তীব্রতা কমে গিয়েছে। যদিও সিটুর দাবি, জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে সংসদ অভিযানের পরিকল্পনা হয়েছে। তার আগে ধর্মঘট সফল হওয়ার জন্য শ্রমিকদের অভিনন্দন জানানোর কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে দু’এক দিনের মধ্যে।