সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের

ফল বার না হতেই দিন ঠিক পরীক্ষার 

পুরনো সিলেবাস (১+১+১) অনুযায়ী স্নাতকস্তরের পার্ট ২-এর পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত সেপ্টেম্বরে। তার ফল এখনও বের হয়নি। অথচ, ওই পরীক্ষার ছ’মাসের মাথায় পার্ট ৩-এর পরীক্ষা নেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:২২
Share:

‘হোক প্রতিবাদ’: রাজবাটি ক্যাম্পাসে চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

পুরনো সিলেবাস (১+১+১) অনুযায়ী স্নাতকস্তরের পার্ট ২-এর পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত সেপ্টেম্বরে। তার ফল এখনও বের হয়নি। অথচ, ওই পরীক্ষার ছ’মাসের মাথায় পার্ট ৩-এর পরীক্ষা নেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। এই সিদ্ধান্ত বদলানোর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন রাজবাটীতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন এক দল পড়ুয়া।

Advertisement

মঙ্গলবার ‘#হোক প্রতিবাদ’ ব্যানারে গেট ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকে টানা চার ঘন্টা বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। উপাচার্য নিমাই সাহার সঙ্গে দেখা করার দাবি জানান। তবে তিনি দেখা না করায় শেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দাবিপত্র পেশ করে বিক্ষোভ তুলে নেন পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও বীরভূম থেকে আসা পড়ুয়ারা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর ৩ এপ্রিল থেকে পার্ট ৩ পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। কিন্তু এ বছর লোকসভা নির্বাচন ও সর্বভারতীয় স্তরে বেশ কিছু পরীক্ষা থাকায় মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পরীক্ষা শুরু করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরীক্ষা নিয়ামক দফতর। সেই মতো ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন কলেজে চিঠি দিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে সোমবারও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ পরীক্ষা পিছনো ও পার্ট ২-এর ফল বের করার দাবিতে পরীক্ষা নিয়ামকের কাছে স্মারকলিপি দেয়।

Advertisement

এ দিন বিক্ষোভ চলাকালীন পাঁচ ছাত্রকে ডেকে পাঠান উপাচার্য। তাঁরা গিয়ে কোনও দাবি না জানিয়ে উপাচার্যকে নীচে নেমে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য অনুরোধ জানান। উপাচার্য বলেন, “আমি বারবার ছাত্রদের ডেকেছি। তাঁরা আমার কাছে এলেও কোনও দাবি জানায়নি। ওই পড়ুয়ারা কোনও দাবি জানালে আমরা নিশ্চিত ভাবে সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করব।’’

পড়ুয়াদের দাবি, পার্ট ২-এর পরীক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের সময় দিয়েছে ১৫ মাস। পরীক্ষার পরে পাঁচ মাস কেটে গেলেও ফল বের হয়নি। তাঁদের আশঙ্কা, দ্রুত ফল বের করতে গিয়ে খাতা ঠিকমতো মূল্যায়ণ হবে না। আবার ফল বেরনো মাত্রই ফর্ম পূরণ করে পার্ট ৩-এর পরীক্ষায় বসতে হবে। এ দিন পড়ুয়াদের পোস্টারে লেখা দেখা যায়, ‘অনেক হয়েছে ছেলেখেলা/ এ বার বন্ধ হোক অবহেলা’, কারও কারও হাতে লেখা ছিল, ‘আমরা রোবট নাকি!’ সিউড়ি মহাবিদ্যালয়ের সৌরভ মণ্ডল, হুগলির ভদ্রেশ্বরের অলিফা মণ্ডলদের কথায়, “সময়ে ফল বের হচ্ছে না। ৫-৬ মাসের মাথায় পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কি ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে?” চন্দননগরের দেবলীনা দাস, হুগলি মহসিন কলেজের প্রভাস বিশ্বাসদেরও ক্ষোভ, “বিশ্ববিদ্যালয়ের খামখেয়ালিপনার জন্য গিনিপিগ হচ্ছি আমরা। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এ রকম সমস্যা নেই।’’ এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরীর কথায়, “বিশ্ববিদ্যায়ের অপরিকল্পিত ছাত্র বিরোধী সিদ্ধান্তকে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’’

উপাচার্য বলেন, “এ মাসেই পার্ট ২-এর পরীক্ষার ফল বেরিয়ে যাবে। পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবেই আমরা পার্ট ৩-এর পরীক্ষা এগিয়ে নিয়ে আসতে চেয়েছি। সেই মতো ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে। যাতে সবাই আগে থেকেই সতর্ক থাকতে পারেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন