Bardhaman

একাদশ-দ্বাদশের বই আসেনি, ক্ষতি পড়ায়

জানা যায়, একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা বিনামূল্যে চারটি সরকারি পাঠ্যপুস্তক পেয়ে থাকেন। দ্বাদশ শ্রেণিতে পান দু’টি। বইগুলি বাজারে পাওয়া যায় না।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৫ ০৮:৪১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

চলতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে সরকারের দেওয়া পাঠ্যপুস্তক প্রতিটি স্কুলে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। সাত দিন কেটে গেলেও তা হয়নি। কবে বই আসবে তা শিক্ষা দফতরের কর্তারা এখনও বলতে পারছেন না, দাবি শিক্ষক ও অভিভাবকদের।

একাদশ শ্রেণির ভর্তি প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। গরমের ছুটি পড়ার আগেই দ্বাদশ শ্রেণিতে পঠন-পাঠন শুরু হয়েছে। গরমের ছুটির পরে ২ জুন স্কুল খোলার কথা। কিন্তু একাদশ শ্রেণির প্রথম ও দ্বিতীয় সিমেস্টারের সাহিত্যচর্চা, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি, ইংরেজিতে ‘এ রেলম’, ‘র‌্যাপিড রিডার’ এবং ‘এ বুক অন ইএসপি’, দ্বাদশ শ্রেণির তৃতীয় ও চতুর্থ সিমেস্টারের সাহিত্যানুশীলন, বাংলা ভাষা শিল্প ও সংস্কৃতি বইগুলি স্কুলে পৌঁছয়নি বলে বিভিন্ন স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে। শিক্ষক ও অভিভাবকদের দাবি, এই দুই শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক বিতরণে প্রত্যেক বছর উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের উদাসীনতার ছবি দেখা যায়। স্কুলের সব থেকে উঁচু দু’টি ক্লাসের পড়ুয়াদের পাঠ্যপুস্তক সময় মতো পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন এই অনীহা? পূর্ব বর্ধমানের একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, গত বছরও প্রথম ও দ্বিতীয় সিমেস্টারের বই দেরিতে পেয়েছেন অনেক পড়ুয়া। অনেক স্কুল সব ছাত্রছাত্রীদের হাতে বই তুলেই দিতে পারেনি বলে শিক্ষা দফতরে অভিযোগ জানিয়েছিল। বাধ্য হয়ে অনেক স্কুল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পোর্টাল থেকে পিডিএফ ডাউনলোড করে বিনামূল্যে ছাত্রছাত্রীদের বিতরণ করেছে। এই বছরও পরিস্থিতি সেই একই দিকে হবে কিনা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষকদের দাবি, শিক্ষা দফতর থেকে ইতিমধ্যে পিডিএফ নিয়ে ইচ্ছুক পড়ুয়াদের প্রতিলিপি দিতে বলা হয়েছে।

জানা যায়, একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা বিনামূল্যে চারটি সরকারি পাঠ্যপুস্তক পেয়ে থাকেন। দ্বাদশ শ্রেণিতে পান দু’টি। বইগুলি বাজারে পাওয়া যায় না। একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণিতে গত শিক্ষাবর্ষ থেকে সিমেস্টার পদ্ধতি চালু হয়েছে। জেলার এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌমেন কোনার বলেন, “একাদশ বা দ্বাদশ শ্রেণির বই কিন্তু সরাসরি স্কুলে আসে না। প্রথমে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে জেলা হয়ে চক্রে যায়। সব শেষে আসে স্কুলে। এখনও পর্যন্ত কবে বই মিলবে জানা যায়নি।” বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শ্রাবণী মল্লিক বলেন, “বইয়ের অভাবে অনলাইন ক্লাস করা যাচ্ছে না।”

প্রধান শিক্ষকদের একাধিক সংগঠনের দাবি, বই না পাওয়ার ফলে সিমেস্টার পদ্ধতি প্রশ্নের মুখে পড়ছে। বই না পাওয়ায় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধা হচ্ছে। তাঁদের পঠন-পাঠনের সময় কমে যাচ্ছে। অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স এবং হেড মিস্ট্রেসেস-এর জেলা সভাপতি রূপক রায় বলেন, ‘‘একাদশের কথা পরে, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদেরই এখনও বই আসেনি। ওরা আগের ক্লাসেও সময়ে বই পায়নি। এ বারও পেল না। গোটা উচ্চ মাধ্যমিকটা ওদের এ ভাবেই শেষ হয়ে যাবে কি না জানতে চেয়ে ছাত্রছাত্রী-অভিভাবকেরা ফোন করছেন।” পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতি ইন্দ্রনীল গোস্বামী বলেন, “স্কুল খোলার আগে অন্তত বইগুলি আসুক।”

তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি অতনু নায়েক বলেন, “১০ তারিখের মধ্যে সংসদ উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচিতে কিছু রদবদল করায় নতুন ভাবে ছাপাতে হচ্ছে বই। আশা করা যায়, চলতি সপ্তাহের মধ্যে বই পাওয়া যাবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন