কালনায় চলছে সর্ষে চাষ। —নিজস্ব চিত্র।
শঙ্কর প্রজাতির সর্ষে চাষে সাফল্য পেল কৃষি দফতর। তাদের দাবি, প্রথম বার চাষেই স্বাভাবিকের থেকে প্রায় দ্বিগুন ফলন হয়েছে। চাষিদের মধ্যেও ভাল সাড়া মিলেছে।
গ্রামীণ বর্ধমানে বহু মানুষ চাষাবাসের উপর নির্ভরশীল হলেও তৈলবীজ এবং ডাল চাষে স্বনির্ভর নয় এ জেলা। লাভজনক ফলন না মেলায় চাষিদের একটা বড় অংশের মধ্যেও তৈলবীজ চাষে অনীহা রয়েছে। কৃষি দফতরের দাবি, এর আগে শঙ্কর প্রজাতির ধান, সব্জি চাষে সাফল্য মিলেছে। তবে সর্ষে এ বারই প্রথম। বহু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চাষের জন্য কালনা মহকুমার পাঁচ ব্লককে বেছে নেওয়া হয়। পূর্বস্থলী ১ ব্লকে ১০০ হেক্টর জমিতে প্রদর্শনী ক্ষেত্র তৈরি করে কৃষি দফতর। বাকি চার ব্লকেও ১০ হেক্টর করে জমিতে চাষ শুরু হয়। বীজ-সহ চাষের অন্যান্য উপকরণ দিয়ে দেওয়া হয় চাষিদের। কৃষি দফতরের দাবি, সাধারণ সর্ষে চাষে যেখানে একর প্রতি জমিতে ৩ কেজি বীজ লাগে সেখানে শঙ্কর প্রজাতির চাষে লাগে এক কেজি। ফলন মেলে ১১০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে। গাছে সর্ষের শুটির সংখ্যাও বেশি থাকে এবং রোগপোকার হামলা তুলনায় কম হয় বলেও কৃষি দফতরের দাবি। সম্প্রতি জেলা কৃষি দফতরের একটি দল পূর্বস্থলীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ওই চাষের এলাকা দেখেন। স্বাভাবিকের থেকে অন্তত দ্বিগুণ ফলন হাতেকলমে দেখে উৎসাহ পান চাষিরাও। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের সর্ষে চাষি সুভাস দাস, মাধব বসাকেরা বলেন, ‘‘বহু বার সর্ষে চাষ করে দেখেছি খরচের টাকা ওঠে না। ফলনও মেলে যৎসামান্য। ফলে তেমন উৎসাহ পেতাম না। তবে এ বার অন্য অভিজ্ঞতা হল।’’ হৃষ্টপুষ্ট সর্ষে গাছ, শুটিতে প্রচুর সর্ষে দেখে উৎসাহী হয়েছেন অন্য চাষিরাও। অনেকেই পরের মরসুমে জমিতে শঙ্কর প্রজাতির সর্ষে চাষ করার কথাও জানিয়েছেন।
মহকুমা কৃষি দফতরের সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘সাধারণ সর্ষে চাষে বিঘা প্রতি জমিতে ১০০ কেজি করে ফলন মেলে। শঙ্কর প্রজাতিতে মিলেছে তার দ্বিগুণ। আর এ জেলার মাটিতে যে সর্ষে ভালই হবে, তারও প্রমাণ মিলেছে।’’ তাঁর আরও দাবি, এই ধরণের সর্ষেতে তেল মিলবে বেশি। চাষিদের লাভ না পাওয়ার অনিশ্চয়তা থাকবে না বলেও তাঁর দাবি।