প্রৌঢ়ের ‘সুইসাইড নোটে’ দোষ স্ত্রী, মেয়েকে

জেমসের স্ত্রীর কাছে অসুস্থতার খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা গিয়ে দেখেন, জেমস ঘরের মেঝেতে পড়ে আছেন। তাঁকে ডিএসপি হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে জানানো হয়। তদন্তকারীরা জানান, মৃতের পকেট থেকে ‘সুইসাইড নোট’টি উদ্ধার করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৮ ০৮:১৫
Share:

প্রতীকী চিত্র।

এক ডিএসপি কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে চাপান-উতোর তৈরি হল দুর্গাপুরে। ডিএসপি টাউনশিপের দয়ানন্দ রোডে সোমবার ভোরে জেমস থমাস (৫০) নামে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। পুলিশ জানায়, মৃতের কাছে মেলা একটি ‘সুইসাইড নোট’-এ মৃতের স্ত্রী, বড় মেয়ে ও তাঁর হবু স্বামীর নাম রয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে ডিএসপি-র এক আবাসনে থাকতেন জেমস। দুর্গাপুর থানার উদ্দেশ্যে লেখা ওই সুইসাইড নোটে স্ত্রী, বড় মেয়ে ও তাঁর হবু স্বামীর অত্যাচারে তিনি আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দাবি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দোষীদের শাস্তির দাবিও জানানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার সন্ধ্যায় ওই নোটের বিষয় হোয়াটসঅ্যাপ করে দিদিকেও জানান জেমস। পর দিন ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, জেমসের স্ত্রীর কাছে অসুস্থতার খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা গিয়ে দেখেন, জেমস ঘরের মেঝেতে পড়ে আছেন। তাঁকে ডিএসপি হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে জানানো হয়। তদন্তকারীরা জানান, মৃতের পকেট থেকে ‘সুইসাইড নোট’টি উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের ঘাড়ে ও বাঁ হাতে দাগ রয়েছে। দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়।

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, স্ত্রী, বড় মেয়ে ও তাঁর হবু স্বামীর সঙ্গে জেমসের অশান্তি চলছিল। প্রতিবেশী ও সহকর্মীদের কাছে প্রচুর দেনা ছিল জেমসের। তাঁর দিদির অভিযোগ, স্ত্রীর অন্যায় বায়না মেটাতে গিয়েই জেমসকে এত দেনা করতে হয়েছিল। দিল্লির এক প্রতারক সংস্থার কাছে টাকা খুইয়ে স্ত্রী জেমসকে টাকার জন্য চাপ দেওয়ায় পরিবারে অশান্তি চলছিল বলে তাঁর দাবি। যদিও পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।

মৃতের স্ত্রী অবশ্য দাবি করেন, মানসিক অবসাদে প্রচুর মদ্যপান করতেন জেমস। রবিবার রাতেও তা করেন। পুলিশ তাঁকে ও বড় মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে শেষকৃত্যের পরে তাঁদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর রাজীব ঘোষ, প্রাক্তন কাউন্সিলর কৃষ্ণেন্দু আচার্যদের বক্তব্য, ‘‘জেমসের মৃত্যু কী ভাবে হয়েছে, সে নিয়ে বাসিন্দারা সন্দিহান। পুলিশ তদন্ত করে সত্য সামনে আনুক।’’

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। মৃতের স্ত্রী ও বড় মেয়েকে জিজ্ঞাবাসাদ করে দু’জনের বয়ান যাচাই করা হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন