আজ শুরু ‘দুয়ারে প্রশাসন’
Swapan Debnath

চারটি পর্যায়ে শিবির করে মানুষের কাছে

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চারটি পর্যায়ে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:৪২
Share:

বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে চলছে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

বছর পাঁচেক আগে অবিভক্ত বর্ধমানে ‘প্রশাসন আপনার দুয়ারে’ চালু করেছিল জেলা প্রশাসন। তৎকালীন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের উদ্যোগে এক জানলা পদ্ধতিতে হাতেনাতে সমস্যার সমাধান করতে পঞ্চায়েতভিত্তিক শিবির করা হয়েছিল। আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি মনে করাচ্ছে ওই প্রকল্পকে। সোমবার বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে সমস্ত বিধায়ক থেকে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তাঁর নির্দেশ, “আমরা প্রশাসনের অঙ্গ। কর্মীরা শিবির করে মানুষের অসুবিধা দূর করবেন। আর আমরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে মানুষ যাতে শিবিরে আসেন, তার ব্যবস্থা করব। শিবির শেষে ফের আলোচনা করে কতটা কাজ করেছি, সেটা জানতে হবে।’’

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চারটি পর্যায়ে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। প্রথম পর্যায়ের কর্মসূচি শেষ হবে ১১ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় পর্যায়ে কর্মসূচি হবে ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তৃতীয় পর্যায়ে ২ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি ও শেষ পর্যায়ে ১৮ থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত কাজ হবে। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) এনাউর রহমান বলেন, “প্রতিটি পঞ্চায়েতের মধ্যবর্তী জায়গায় শিবির করতে বলা হয়েছে। যাঁরা আসবেন, তাঁদের প্রত্যেকের মাস্ক থাকা বাধ্যতামূলক বলে প্রচার চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বড় ফাঁকা জায়গায় শিবির করতে বলা হয়েছে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, জাতিগত শংসাপত্র, শিক্ষাশ্রী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো দশটি সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রতিটি শিবিরে দশটি করে ‘কিওস্ক’ করা হবে। কেউ কোনও অভিযোগ নিয়ে এলে, তার জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। যে সব পরিষেবা বা অভিযোগের নিষ্পত্তি শিবির থেকেই দেওয়া সম্ভব হবে, তা তৎক্ষণাৎ দেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে, অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্তে যাবেন কর্মীরা। রিপোর্ট পেয়ে, পরের পর্যায়ে শিবিরে অভিযোগের নিষ্পত্তির নিশ্চয়তা দিতে চাইছে প্রশাসন।

Advertisement

প্রথম দিন জেলার ১৮টি জায়গায় শিবির হওয়ার কথা। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আউশগ্রাম হাইস্কুল, ভাতারের রাধানগর প্রাথমিক স্কুল, নুতা প্রাথমিক স্কুল, দেওয়ানদিঘি মোড়, জামালপুর ১ পঞ্চায়েত অফিস, কালনা ১ ব্লকের মছলন্দপুর হাইস্কুল, কালনা ২ ব্লকের অকালপৌষ পঞ্চায়েত অফিস, কাটোয়া ২ ব্লকের করুই পঞ্চায়েত অফিস, কেতুগ্রাম ২ ব্লকের বহরান জয়দুর্গা হাইস্কুল, খণ্ডঘোষের সগরাই সুকান্ত বিদ্যাপীঠ, মঙ্গলকোটের কৈচর এস বি গার্লস হাইস্কুল, রায়না ১ ব্লকের পলাসন পঞ্চায়েতে ওই শিবির হবে। পুর- এলাকারগুলির মধ্যে বর্ধমানের বোরহাটে সিডিএস ভবন, ষাঁড়খানা গলিতে পুরসভার গুদাম, কালনার পুরশ্রী হল, কাটোয়া শহরে থানা রোডের বালিকা বিদ্যালয় ও দাঁইহাটে সমাজবাটির কাছে প্রাথমিক স্কুলে শিবির করবে প্রশাসন। জেলাশাসক বলেন, “আমি নিজে ও প্রত্যেক অতিরিক্ত জেলাশাসক (এডিএম) শিবিরগুলির উপরে নজর রাখবেন। আমরা শিবিরগুলি পরিদর্শন করব।’’

বিধানসভা নির্বাচনের আগে ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর ‘প্রশাসন আপনার দুয়ারে’ কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল বর্ধমান জেলা প্রশাসন। ভোটের ফলে জেলার ১৬টি বিধানসভার মধ্যে ১৪টি ছিল তৃণমূলের দখলে। এ বারও ভোটকে নজরে রেখেই এই কর্মসূচি, দাবি করছেন বিরোধীরা। বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর কটাক্ষ, “বিডিওদেরও তৃণমূল নেতা করে রাস্তায় নামিয়ে দিল শাসকদল। তা হলে কি গত পাঁচ বছর ধরে প্রশাসন জনগণের দুয়ারে ছিল না!” স্বপনবাবুর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্পগুলিতে বেশিরভাগ মানুষ সুবিধা পেয়েছেন। আরও মানুষ যাতে এই সুবিধা নিতে পারেন, সে জন্যই এই কর্মসূচি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন