Mid Day Meal

‘নিম্ন মানের’ খাদ্যদ্রব্য বিতরণ মিড-ডে মিলে

সংগঠনগুলির বক্তব্য, কোভিড পরিস্থিতিতে খাদ্যশস্যের বরাদ্দ কমায় পড়ুয়াদের পুষ্টি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২১ ০৪:৫৫
Share:

এমন ডাল দেওয়ার নালিশ। — নিজস্ব চিত্র

জুনের মিড-ডে মিলে খাদ্যশস্যের বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আগেই। এ বার নিম্নমানের পোকা ধরা মুসুর ডাল, নোংরা চিনি দেওয়ার অভিযোগ তুলল বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের দাবি, নিম্ন মানের সামগ্রী বিতরণ করতে গিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে শিক্ষকদের।

Advertisement

গত ২৫মে শিক্ষা দফতর থেকে জারি করা নির্দেশিকায় জানানো হয়, জুনে মিড-ডে মিলে পড়ুয়া পিছু দু’কেজি চাল, এক কেজি আলু, ২৫০ গ্রাম করে ডাল ও চিনি, ১০০ গ্রাম সয়াবিন ও একটি সাবান দেওয়া হবে। অর্থাৎ, আগের মতো এক কেজি করে ছোলা আর দেওয়া হবে না। তা ছাড়া, গত মাসের তুলনায় চিনি ও সয়াবিনের পরিমাণও অর্ধেক করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন এর বিরোধিতা করে। সংগঠনগুলির বক্তব্য, কোভিড পরিস্থিতিতে খাদ্যশস্যের বরাদ্দ কমায় পড়ুয়াদের পুষ্টি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। বিধানসভা নির্বাচন ছিল বলেই মে পর্যন্ত ছোলা ও বেশি করে চিনি, সয়াবিন দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন মিটতেই বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হল, এমন অভিযোগ করেছে বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি।

বিভিন্ন স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, মিড-ডে মিলের সামগ্রী বিতরণের কাজ শুরু হয়েছে গত ৭ জুন থেকে। আর তা করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিভিন্ন স্কুলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষকেরা। বুধবার বিজড়া প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তথা বাম প্রভাবিত ‘নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’র দুর্গাপুর চক্রের সাধারণ সম্পাদক অনির্বাণ বাগচীর অভিযোগ, ‘‘মুসুর ডাল পোকা ধরা। সে ডাল বিতরণ করতে গিয়ে অভিভাবকদের গঞ্জনা শুনতে হয়েছে। বুঝিয়েসুঝিয়ে অভিভাবকদের রাজি করিয়েছি। তবে দু’জন অভিভাবক পোকা ধরা মুসুর ডাল ছুড়ে ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।’’ শিক্ষকেরা জানান, ওই অভিভাবকেরা প্রশ্ন তোলেন, কেন এমন নিম্ন মানের সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। তবে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি ওই অভিভাবকেরা।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে আসানসোল জেলা বিজেপি টিচার্স সেলের আহ্বায়ক বিকাশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আগের বার পর্যন্ত স্কুলই এ সব সামগ্রীর ব্যবস্থা করেছিল। কোনও অভিযোগ ছিল না। এ বার আর তা স্কুলের হাতে নেই। পোকা ধরা ডাল, নোংরা চিনি বণ্টন করতে গিয়ে বহু স্কুলেই শিক্ষকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। এর তদন্ত হতে হবে।’’ তাঁর প্রস্তাব ‘‘আমাদের দাবি, সমস্যা এড়াতে সরাসরি পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করুক সরকার।’’ ‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র জেলা সভাপতি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোনও স্কুল থেকে সরাসরি আমাদের কেউ কিছু জানাননি। তবে মিড-ডে মিল বিলি শুরু হওয়ার আগেই আমাদের প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছিল, রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার একটা চেষ্টা চলছে। আমরা সংশ্লিষ্ট জায়গায় তা জানিয়েছি।’’

তবে জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) বিভু গোয়েল বলেন, ‘‘আপাতত, একটি স্কুল থেকে অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট আধিকারিক সেই স্কুলে গিয়ে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। অন্য স্কুল থেকে অভিযোগ পেলেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাঁরা দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement