পূর্বস্থলী স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র
কারও বাবা-মা ইটভাটায় কাজ করেন। অনেকে আবার খেতমজুর পরিবারের ছেলেমেয়ে। দুপুরে কোন দিন কেমন খাবার মেলে, ঠিক নেই। পূর্বস্থলী এবং পলাশপুলি এলাকার এমন বেশ কিছু ছেলেমেয়েকে সোমবার দুপুরে নানা পদ খাওয়ালেন স্থানীয় নীলমণি ব্রহ্মচারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সোমবার, বিশ্ব খাদ্য দিবসের দিন এমন পঙ্ক্তিভোজে যোগ দেয় প্রায় শ’দুয়েক শিশু-কিশোর ও তাদের মায়েরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর এই স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক সোমেশ মণ্ডল নিজের উদ্যোগে এই দিনটিতে ৫০ জন শিশু-কিশোরের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এ বার এই উদ্যোগে সোমেশবাবু পাশে পান তাঁর সহকর্মী রুদ্রপ্রসাদ গোস্বামী, উত্তম বসাক, মুকুল মণ্ডল, রেখা মণ্ডলদের। এর পরেই আরও বড় আকারে উদ্যোগ হয়। তাঁরা পূর্বস্থলী, পলাশপুলি-সহ আশপাশের এলাকার ইটভাটার শ্রমিকদের ও দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের নিমন্ত্রণ করেন।
দুপুর ১টা নাগাদ পূর্বস্থলী স্টেশনের ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ও স্টেশন লাগোয়া একটি বস্তির কাছে মাটিতে পাত পেড়ে শুরু হয় খাওয়াদাওয়া। মেনুতে ছিল বাসমতি চালের ভাত, আলুভাজা, আলু-পালংশাক, আলু-ফুলকপি, মুরগির মাংস, চাটনি, দই ও মিষ্টি। বছর পাঁচেকের খুকু রাজবংশী, রাজু মন্দল, মনি রাজবংশীরা বলে, ‘‘বাড়িতে দুপুরে বেশির ভাগ দিনই ভাত, আলুভাতে খেতে হয়। আজ অনেক রকম খাবার আনন্দ করে খেয়েছি।’’ স্টেশনে এমন আসর দেখে উৎসাহী হন ট্রেনযাত্রীদের অনেকেও। দাঁইহাটের বাসিন্দা গোবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এমন উদ্যোগ আরও হওয়া উচিত।’’
বিকেলে খাওয়া পর্ব শেষ করে তৃপ্তির হাসি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মুখে। সোমেশবাবু বলেন, ‘‘পরের বছর এই দিনে আমরা আরও বেশি ছেলেমেয়ের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার চেষ্টা করব।’’