আলোচনায় সেচমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
বালি তোলার নাম করে নদীর উপর অস্থায়ী রাস্তা তৈরি কিংবা নৌকা না চালিয়ে নদীর উপর অস্থায়ী সেতু তৈরি বরদাস্ত করবে না রাজ্য সরকার— বৃহস্পতিবার বর্ধমানে এসে এ কথা সাফ জানিয়ে দেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সেচ বাংলো ঘুরে দেখার ফাঁকে তিনি বলেন, “নদীর গতিপথ রুদ্ধ করে এ সব করা যাবে না। জেলা থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। পুরোদমে বর্ষা আসার আগে ওই অস্থায়ী সেতু নির্মাণকারীদের নোটিস পাঠিয়ে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিতে বলা হয়েছে।” নির্মাণকারীরা নির্দেশ না মানলে জেলা প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে ওই সব সেতু ভেঙে এফআইআর করতে বলেছেন সেচমন্ত্রী।
এ সপ্তাহেই জামালপুরের শম্ভুপুরে দামোদরের উপর একটি বাঁশের সেতু থেকে পড়ে মারা যান চক্ষণজাদি গ্রামের প্রৌঢ়া রেহেনা বেগম শেখ। এর আগেও ওই অস্থায়ী সেতু পারাপার করতে গিয়ে তিন জন মারা গিয়েছেন। ওই ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ জনতা বাঁশের সেতুটি ভেঙে দেন। এরপরেই টনক নড়ে সেচ দফতরের দামোদর ক্যানেল ডিভিশনের। তাঁরা সরেজমিন তদন্ত করে দামোদরের উপর গলসির শিল্যাঘাট থেকে জামালপুর পর্যন্ত অস্থায়ী ৮টি সেতুর খোঁজ পেয়েছেন। সেচমন্ত্রীকে দামোদর ক্যানেল ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে নির্মাণকারীদের নোটিশ করেছি। তার প্রতিলিপি সংশ্লিষ্ট থানাকে দেওয়া হয়েছে।”
এ কথা শুনেই জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবকে উদ্দেশ্য করে সেচমন্ত্রী বলেন, “জেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালিয়ে ওই সব অস্থায়ী সেতু ভেঙে দিতে হবে। নদীর স্বাভাবিক গতিপথ রুদ্ধ করে বেআইনি নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে হবে।” সেচ দফতরের কর্তারা জানান, শুধু দামোদর নয়, বালি তোলার জন্য অজয়, দ্বারকশ্বর, ময়ূরাক্ষী, কংসাবতী-সহ একাধিক নদীতে ইজারাদাররা অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করেছেন। পাথর, মাটি ও বালি দিয়ে তৈরি ওই রাস্তায় নদীর স্বাভাবিক গতিপথ আটকে গিয়ে চর পড়ে গিয়ে পাড় ভাঙতে থাকে। আবার নৌকা না চালিয়ে ইজারাদাররা চরের উপর অস্থায়ী সেতু তৈরি করেন, তাতেও গতি আটকে যায় বলে নদী বিশেষজ্ঞদের দাবি।